গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের কবলে পড়েছে জাপান। দেশটির প্রধান দ্বীপ হনশুর পূর্ব উপকূলে এ দাবানল শুরু হওয়ার পর পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হতে থাকে। এ দাবানলে এখন পর্যন্ত অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।
জাপানের অগ্নিনির্বাপণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা সোমবার জানিয়েছে, ওফুনাতো শহরের কাছে দাবানল প্রায় ২,১০০ হেক্টর জমিতে ছড়িয়ে পড়েছে। দাবানলের ভয়াবহতা মোকাবেলা করতে দুই হাজার দমকলকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে এবং ৪ হাজার ৬০০ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, দাবানল নেভানোর জন্য সেনাবাহিনীসহ ১৬টি হেলিকপ্টার কাজ করছে। জাপানের বিভিন্ন অঞ্চলের দমকলকর্মীরা এই দাবানল নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে, দাবানলটির পরিধি গত তিন দিনে দ্বিগুণ হয়ে ৪,৫০০ একর জমিতে ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে এটি ৩৩ বছরের মধ্যে জাপানের সবচেয়ে বড় দাবানল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। দাবানলের কারণে ওফুনাতো শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, অনেকেই তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন।
জাপানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম এনএইচকে জানায়, ১২০০ জনেরও বেশি মানুষকে জরুরি আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে এবং বেসরকারি সামাজিক স্থাপনাগুলোতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওই এলাকার স্কুল ও ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
এছাড়া, স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সানরিকু-চো রিওইরিতে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, এই দাবানলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩০০ পরিবারের ৩৬০০ জনেরও বেশি সদস্যকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জাপানের অগ্নিনির্বাপণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, দাবানলটির সূত্রপাত বুধবার ঘটেছিল এবং ততক্ষণে এটি ৮৪টি বাড়ির ক্ষতি করে ফেলেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশটি কর্তৃপক্ষ ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তবে দাবানল থামানো পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে আরও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

দাবানলটি জাপানের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় যোগ করেছে, এবং সরকার দ্রুততার সাথে বিপর্যস্ত এলাকা থেকে বাসিন্দাদের উদ্ধার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে।
পড়ুন : থাইল্যান্ডে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত অন্তত ১৮
দেখুন : মাদারীপুরে বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড |
ইম/