কাশ্মির নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত আজাদ কাশ্মিরে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত হন। এরপরই পাকিস্তান পাল্টা হামলা চালায় এবং সামরিক বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেয় ইসলামাবাদ। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির জেরে ভারতের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ২১টি বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানায়, এসব বিমানবন্দর ১০ মে ভোর ৫টা ২৯ মিনিট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
বন্ধ থাকা বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে রয়েছে জম্মু, শ্রীনগর, লেহ, অমৃতসর, চণ্ডীগড়, ধর্মশালা, শিমলা, জোধপুর, বিকানের, জয়সালমের, রাজকোট, কান্ডলা, পোরবন্দর, গোয়ালিয়র ও হিন্ডনসহ আরও অনেকগুলো। বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই বেসামরিক ও সামরিক উভয় ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়। পরিস্থিতির কারণে ইন্ডিগো ১৬৫টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে, এয়ার ইন্ডিয়া, স্পাইসজেট, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস এবং আকাশ এয়ারও তাদের বহু ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও এ পরিস্থিতির প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার করতে না পারায় যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যগামী কিছু ফ্লাইট বিকল্প রুটে ঘুরিয়ে দিতে হচ্ছে। আমেরিকান এয়ারলাইন্স এবং ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স দিল্লিগামী ফ্লাইট বাতিল করেছে। ইউনাইটেড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা দিল্লির ফ্লাইট বাতিল করেছি।”
ভারতের সামরিক বাহিনী “অপারেশন সিন্দুর” নামে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরসহ ছয়টি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে অন্তত ৮ জন নিহত এবং ৩৫ জন আহত হন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান জানায়, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধ বিমান ভূপাতিত করেছে এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরগুলো ৪৮ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রেখেছে।
এই ঘটনাপ্রবাহের কারণে সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছে। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪-এ দেখা গেছে, নয়া দিল্লির উত্তরাংশে বাণিজ্যিক কোনো ফ্লাইট চলছিল না, একমাত্র দেহরাদুন ছাড়া। বিভিন্ন বিমান সংস্থা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাত্রীদের সতর্ক করে চলেছে এবং ফ্লাইট স্ট্যাটাস দেখে পরিকল্পনা করার আহ্বান জানাচ্ছে।
এই অবস্থায় আকাশপথে যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ায় ব্যবসা, পর্যটন ও কূটনৈতিক কার্যক্রমেও বড় ধাক্কা লাগছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি দ্রুত এই উত্তেজনা প্রশমিত না হয়, তাহলে তা গোটা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
পড়ুন: ভারতের অম্রিতসারে বিস্ফোরণের শব্দ, ব্ল্যাকআউট ঘোষণা
দেখুন: বাংলাদেশের চেয়ে কম দামে ভারতে মিলছে ইলিশ
ইম/