39.2 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৮, ২০২৫

ভারতে তুষারধসে নিহত ৪, নিখোঁজ বহু

ভারতের হিমালয় রাজ্য উত্তরাখণ্ডে ভয়াবহ তুষারধসে অন্তত চারজন নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। শুক্রবার, তিব্বত সীমান্তবর্তী মানা গ্রামে সড়ক নির্মাণকর্মীরা তুষারধসে ভেসে যান। ভারতের সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ৫০ জন শ্রমিককে উদ্ধার করে। তবে, এর মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন পাঁচজন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, কারণ উদ্ধারের কাজ এখনও অব্যাহত রয়েছে।

এ ঘটনায় ভারতের আবহাওয়া বিভাগ আগেই সতর্কতা জারি করেছিল। ভারি বৃষ্টিপাত ও তুষারপাতের কারণে হিমাচল প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মির এবং উত্তরাখণ্ডে তুষারপাতের জন্য কমলা সতর্কতা জারি করা হয়। পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে, কারণ তুষারপাত ও বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ধার তৎপরতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই অঞ্চলগুলোতে তীব্র শীত এবং শুষ্কতাও উদ্ধারকাজে সমস্যার সৃষ্টি করেছে।

মানা গ্রামে সড়ক নির্মাণ কর্মীরা একটি ক্যাম্পে অবস্থান করছিলেন যখন তুষারধস আঘাত হানে। সাবেক গ্রাম কাউন্সিল সদস্য গৌরব কুনওয়ার জানিয়েছেন, ওই স্থানটি যাযাবরদের এলাকা, যেখানে স্থায়ী বসবাসকারী কেউ নেই। সীমান্ত সড়কে কাজ করা শ্রমিকরা শীতকালে সেখানে অবস্থান নেন, এবং কিছু সেনা সদস্যও মোতায়েন রয়েছেন।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, উদ্ধারকারী দল প্রায় ৫০ জনকে তুষার ও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করেছে। আহতদের মধ্যে ১৯ জনকে স্থানীয় একটি আর্মি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের বেশিরভাগের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত রয়েছে। কিছু আহত ব্যক্তিকে স্ট্রেচারে করে সরিয়ে নেওয়ার ভিডিওও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রমে সেনা ও স্থানীয় প্রশাসন একযোগে কাজ করছে।

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি জানিয়েছেন, তুষারধসের পর বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনের উদ্ধারকারী দল রাতদিন উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “সরকার এই সংকটময় মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” এর পাশাপাশি, উদ্ধারকারী দল হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, ভারতের উত্তরাঞ্চলের এই অঞ্চলে তুষারধসের পর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত এবং তুষারপাত এই অঞ্চলের পরিবেশ আরও কঠিন করে তুলেছে, যা উদ্ধার কার্যক্রমকে জটিল করেছে। আবহাওয়া বিভাগের সতর্কতায় বলা হয়েছে, শীতকালীন তুষারপাত এবং বৃষ্টিপাত চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।

তুষারধসের পর উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও, এখনও নিখোঁজ ব্যক্তিদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে উদ্ধারকারী দলগুলোর জন্য তীব্র শীত এবং কঠিন ভূ-প্রকৃতির কারণে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে, সরকার এবং সেনাবাহিনী তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যাতে যেকোনোভাবে নিখোঁজদের উদ্ধার করা যায়।

এই ভয়াবহ তুষারধসের ঘটনা উত্তরাখণ্ডের জনগণের জন্য একটি বড় ধাক্কা। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে এবং উদ্ধার কার্যক্রমে সহায়তার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

পড়ুনঃ পাকিস্তানকে হারিয়ে সেমিতে এক পা ভারতের

দেখুনঃ ভারতে প্রথম বরফ এসেছিল কিভাবে? |

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন