মঙ্গল গ্রহে পানির অস্তিত্বের নতুন প্রমাণ পাওয়া গেছে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ইনসাইট ল্যান্ডার থেকে পাওয়া নতুন সিসমিক (ভূকম্পন) ডেটার বিশ্লেষণে মঙ্গল গ্রহের গভীরে তরল পানির উপস্থিতির সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়েছে। এই গবেষণা মঙ্গলের ভূত্বকের গভীর অঞ্চলে (প্রায় ১১.৫ থেকে ২০ কিলোমিটার) তরল পানির অস্তিত্বের সম্ভাবনা উন্মোচন করেছে, যা গত বছর প্রস্তাবিত হয়েছিল।
এই আবিষ্কারটি মার্সকোয়েক বা মঙ্গলের ভূমিকম্প থেকে পাওয়া সিসমিক তরঙ্গের গতি বিশ্লেষণ করে করা হয়েছে। সিসমিক তরঙ্গের গতি এবং গতিপথের মাধ্যমে গবেষকরা মঙ্গলের ভূগর্ভে তরল পানির অস্তিত্বের ধারণাকে আরও জোরালোভাবে সমর্থন করেছেন। জাপানের হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ইকুও কাটায়ামা এবং মেরিন জিওডায়নামিকস গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইউয়া আকামাতসু নিশ্চিত করেছেন যে, নতুন ডেটা তরল পানির অস্তিত্বের সম্ভাবনা আরও শক্তিশালী করেছে।
গবেষকরা জানান, প্রাচীন প্রায় বিলিয়ন বছর আগে পানি ছিল, তবে বর্তমানে ভূগর্ভেও তরল পানি থাকতে পারে বলে তাদের মডেল ইঙ্গিত দেয়। এই আবিষ্কারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ যদি ভূগর্ভে তরল পানি থাকে, তাহলে সেখানে জীবনের উপস্থিতির সম্ভাবনা থাকতে পারে। তাই এটি ভবিষ্যতেগবেষণা এবং মানব অভিযানে একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
গবেষণার ভিত্তি ছিল নাসার ইনসাইট ল্যান্ডারের SEIS (Seismic Experiment for the Interior Structure) যন্ত্র থেকে পাওয়া ভূকম্পন সংক্রান্ত ডেটা। ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ইনসাইট ল্যান্ডার পৃষ্ঠে ভূকম্পন পরিমাপ করেছে। SEIS যন্ত্র তিন ধরনের সিসমিক তরঙ্গ শনাক্ত করেছে, যেগুলি পি-ওয়েভস (Compression waves), এস-ওয়েভস (Shear waves), এবং সারফেস ওয়েভস হিসেবে পরিচিত। এই তরঙ্গগুলোর গতির বিশ্লেষণ করে ভূগর্ভে তরল পানির উপস্থিতির সম্ভাবনা উঠে এসেছে।

এই আবিষ্কারটি মঙ্গল গ্রহে প্রাণের সম্ভাবনা খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
যদি ভূগর্ভে তরল পানি পাওয়া যায়, তাহলে তা পৃথিবীর বাইরের জীবনের সন্ধান করতে বিজ্ঞানীদের সহায়তা করতে পারে। ভবিষ্যতে অভিযানে এই নতুন তথ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, কারণ তা গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব এবং গবেষণার ক্ষেত্রেও নতুন দিক নির্দেশনা প্রদান করবে।
পড়ুন: দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন
দেখুন: মঙ্গল গ্রহে অদ্ভুত আকৃতি, এলিয়েনরাই বানালো পিরামিড? |
ইম/