ঈদুল আজহা ৭ জুন। সবশেষ অফিস ছিল বুধবার। তাই সন্ধ্যার পর থেকেই ঘরমুখো ানুষ বাড়তে থাকে রাস্তায়। মানুষ যত বাড়ে, রাতও তত বাড়ে। আর কমতে থাকে গাড়ীর সংখ্যা। অনেকেই পড়েন সংকটে। আবার অনেক কারখানা ছুটি দেওয়ার কারণে শ্রমিকরা রাতেই বাড়ি ফেরার জন্য বেরিয়ে যায়। তাই বিভিন্ন সড়কে যানজটও দেখা দেয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজট
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশের প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়কজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। বুধবার (৪ জুন) রাত পৌনে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনের সানারপাড় থেকে মেঘনা টোল প্লাজার অংশের ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এই যানজটে আটকে আছেন মানুষজন।

ঈদযাত্রায় ঢাকাতেই ভোগান্তি, হেমায়েতপুর থেকে শ্যামলী সড়কে ধীরগতি
ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে আজই ছিল শেষ কার্যদিবস। কার্যত ঈদযাত্রায় সর্বোচ্চ চাপ এখন গাবতলী-টেকনিক্যাল, কল্যাণপুরে। কোথাও যানজট, কোথাও ধীরগতির কারণে উত্তরবঙ্গ রুটের অধিকাংশ ঢাকা ফেরত বাস পড়ছে ভোগান্তিতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাভারের হেমায়েতপুর থেকে রাজধানীর কল্যাণপুর-শ্যামলী পর্যন্ত সড়কে যান চলাচলে গাড়ির জট, কোথাও ধীরগতি। সংগত কারণে সব রুটের বাস আধা ঘণ্টা, এক ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে।

চন্দ্রায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি, চলছে ধীর গতিতে
অধিকাংশ শিল্প কারখানায় ঈদ ছুটি ঘোষণা করার পর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের চন্দ্রায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এতে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা দিয়েছে। কারখানার ছুটির পরিপ্রেক্ষিত্রে সকালের তুলনায় বেলা বাড়ার সাথে সাথে চাপ বাড়তে থাকে চন্দ্রায়। এতে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে। রাতে এ চাপ আরও বাড়বে পারে বলে ধারণা করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (৪ জুন) রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের চন্দ্রায় এ চিত্র দেখা যায়।
বিভিন্ন কারখানা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ধাপে ধাপে শিল্পকারখানায় ছুটি দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে নিবন্ধিত ২ হাজার ১৭৬টি কারখানার অধিকাংশ আজ ঈদ ছুটি পর্যায়ক্রমে ঘোষণা করায় বেলা বাড়ার সাথে সাথে মহাসড়কে চাপ বাড়তে থাকে। বুধবার কাজের মজুরি তুলে অনেক কারখানা শ্রমিক, কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষজন রাতে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এতেই মহাসড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। বর্তমানে চন্দ্রার আশপাশে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। তবে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন যাত্রীদের অপেক্ষায় যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে রাখা, ভাড়া নিয়ে দরকষাকষি ও যাত্রী তুলতে যে সময়টা পাচ্ছেন তার তুলনায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ অতিরিক্ত থাকায় যানবাহনের এ দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে।
লঞ্চে বেড়েছে যাত্রীর চাপ
দীর্ঘ ছুটি! যত কষ্টই হোক, উদ্দেশ্য অপেক্ষায় থাকা পরিবার-পরিজন ও নিকটাত্মীয়দের নিয়ে বাড়িতে পৌঁছে সবাই মিলে পবিত্র ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা। এই আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানীবাসী সড়কপথের পাশাপাশি বেছে নিয়েছেন নৌপথও। সন্ধ্যা নামতেই সেই চিত্রই যেন ফুটে উঠেছে রাজধানীর সদরঘাট এলাকায়, যেখান থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের ৪১টি রুটে যাত্রা করছে ছোট বড় বহু লঞ্চ।
বুধবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় সদরঘাটে দেখা যায়, দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বিকেল থেকেই বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে পুরো টার্মিনাল যাত্রীতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। শিশু থেকে বৃদ্ধ, সব শ্রেণির যাত্রীর আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়।
যদিও অনেক যাত্রী লঞ্চযাত্রা স্বস্তিকর ও আরামদায়ক বলে মনে করেন। আবার কম আয়ের মানুষেরা ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
পড়ুন : ঈদযাত্রায় মহাসড়কে চাপ: বরিশালের পথে দুর্যোগ, স্বস্তির হাওয়া উত্তরে