বুর্কিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ত্রাওরে সৌদি আরবের ২০০টি মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি সৌদি সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন, তাদের দেশে আরো উপকারী প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে, যেমন স্কুল, হাসপাতাল এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী ব্যবসা। প্রেসিডেন্ট ত্রাওরের এই সিদ্ধান্ত বুর্কিনা ফাসোর সার্বিক উন্নয়নের দিকে তার দৃঢ় মনোভাবকে প্রমাণিত করেছে।

প্রেসিডেন্ট ত্রাওরে জানিয়েছেন, বুর্কিনা ফাসোতে প্রচুর মসজিদ রয়েছে,
অনেক মসজিদ পূর্ণভাবে ব্যবহারও হয় না। তার মতে, দেশে মসজিদের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যা দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করবে। তিনি আরও বলেন, মসজিদ নির্মাণের চেয়ে শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন দেশের জনগণের জন্য বেশি উপকারী হবে।
ত্রাওরে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার সরকারের বৃহত্তর উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে মনোনিবেশ করেছেন। তার সরকার সরকারি প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় সংস্কার এনেছে এবং এখন গৃহায়ন মন্ত্রণালয় পুরো নির্মাণ প্রক্রিয়ার তদারকি করছে। এর মাধ্যমে তিনি নিশ্চিত করতে চান যে, দেশের নির্মাণ কাজগুলো নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব এবং উচ্চমানের হবে।
এছাড়া, গৃহসংকট মোকাবিলায়ও তার পদক্ষেপ রয়েছে। গত ১২ জুলাই তিনি ১,০০০টি সামাজিক বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্প ঘোষণা করেছেন, যা নিরাপত্তাজনিত কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হবে। তার লক্ষ্য, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিটি বুর্কিনাবেকে আবাসন সুবিধা প্রদান করা।
অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে, তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ গ্রহণও প্রত্যাখ্যান করেছেন। বরং, তিনি দেশের নিজস্ব সম্পদ ও সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে কৃষি, স্থানীয় শিল্প এবং টেকসই উন্নয়নের দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। তার মতে, এটি দেশের দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পথ।
ত্রাওরের মতে, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নই বুর্কিনা ফাসোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বিশ্বাস করেন, এসব ক্ষেত্রের উন্নয়নই দেশের ভবিষ্যত উন্নতি নিশ্চিত করবে। সৌদি আরবের মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে তিনি পরিষ্কারভাবে তার প্রশাসনের অগ্রাধিকার বিষয়গুলো নির্ধারণ করেছেন।
এটা পরিষ্কার যে, প্রেসিডেন্ট ত্রাওরে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তার দিকে নজর রেখে সরকার পরিচালনা করছেন। তার প্রশাসনের লক্ষ্য বুর্কিনা ফাসোর অর্থনীতি শক্তিশালী করা এবং জনগণের জীবনমান উন্নত করা।
পড়ুন: সৌদিতে বৈঠকে বসছে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন
দেখুন: ১৭ বছর ধরে ‘ঘুমিয়ে’ কে এই সৌদি যুবরাজ
ইম/