মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শামীম আহমেদকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিল করেছে স্থানীয় সচেতন ছাত্র-জনতা। গত ১৪ জুন রাত ৮টায় রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে এলাকার বিভিন্ন সড়ক মহাসড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পূনরায় জাদুঘরের সামনে এসে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করেন তারা। এ সময় তারা ৭২ ঘন্টার মধ্যে ডিডি শামীম আহম্মদকে অপসারণ করার দাবি করেন।
তারা আরো বলেন,আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী শামীম আহমেদ মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর হেড অফিসে দীর্ঘ দুই বছর ডিডি এডমিন এর দায়িত্বে থাকা কালীন সময়ে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে রাজধানীর মদের বার, শীশা বার গুলো থেকে প্রতি মাসে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে টাকার কুমির বনে গেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের দোসর হারুন বিশ্বাসের আস্থাভাজন হিসেবে ঢাকা- চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন হটস্পট গুলোতে পোস্টিং নিতেন। ঐ আমল থেকে তিনি এতোটাই প্রভাবশালী ছিলেন যে, ব্যাপক দূর্নীতির অভিযোগে তাকে টাঙ্গাইলে ট্রান্সপার করা হলে ও তিনি কর্তাবাবুদের ম্যানেজ করে টাকার বিনিময়ে মাত্র ৩ মাস পরেই আবার ঢাকা মেট্টো উত্তর মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক হিসেবে যোগ দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুলশান, বনানী, মিরপুর ও উত্তরার কয়েকজন শীশা বার ও মদের বারের মালিক ও ম্যানেজার বলেন, ঢাকা মেট্টো উত্তর কার্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ডিডি শামীম আহমেদ মিরপুর, মোহাম্মদপুর, গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, উত্তরা, রমনা, বাড্ডা, রামপুরায় প্রকাশ্যে ইয়াবা, গাজা, ফেনসিডিল ও হেরোইনসহ সকল ধরনের মাদক এলাকা গুলো সয়লাব হয়ে গেছে। ভুক্তভুগি বারের মালিকগণ বলেন,তার চাহিদা মতো মাসিক মাসহারা না দিলেই দলবল নিয়ে বৈধ মদের বার গুলোতো অভিযানের নামে বার লাইসেন্স ক্যান্সেল করার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ সময় সচেতন ছাত্র জনতারা আরো বলেন, দূর্নীতিবাজ ডিডি শামীম আহম্মেদ এর দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ডে এলাকার উঠতি বয়সী ছেলে মেয়েদের হাতে সহজেই মাদক পৌঁছে যায়। তার সাথে রয়েছে বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের আঁতাত। এ ধরনের অসংখ্য অভিযোগ থাকায় আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে শামীমের অপসারণ দাবি করেন সচেতন ছাত্র জনতা।
সচেতন ছাত্র-জনতার আহ্বায়ক মাহবুব হোসেন বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দূর্নীতিবাজ সকল কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে প্রকাশের দাবি জানান।
মাদকের ডিডি শামীম আহমেদকে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে অপসারণের দাবিতে মশাল মিছিল বিষয়ে তার মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা একটু খবর নিয়ে দেখেন, এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং স্বার্থ হাসিলের জন্য করানো হয়েছে। আপনি মদের বার সিসা বার থেকে দালালদের মাধ্যমে অসৎ উপায়ে টাকা নেন, টাকা না দিলেই আপনি শিশা লাউন্স গুলোতে অভিযান চালান এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ সব জঘন্যতম কথা যারা বলতেছে তারা এর আগেও আমাদের অন্যান্য অফিসারদের নিয়ে ও এমন কথা বলেছে। তিনি বলেন,গতকাল যে মিছিলটা তারা করাইছে এ রকম মিছিল কয়টা হয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
ঢাকায় আবার কবে ফিরে এসেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার পোস্টিংটা আগষ্ট বিপ্লবের পরে সেপ্টেম্বরের ৪ তারিখ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যারা মশাল মিছিল করেছে এরা ছাত্র জনতা না, এরা হচ্ছে একটা গ্রুপ, এরা এর আগেও আমাদের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও মানববন্ধন করেছে, এছাড়া একটা সিসা বারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে, সিসা বারে তারা টাকাও চাইছে, আমাদের কিছু কর্মকর্তার কাছে সুবিধা দাবি করছে। তিনি আরো বলেন, তারা একটা চাঁদাবাজ গ্রুপের মত ফরম্যাট তৈরি করে একত্রিত হয়েছে। আপনাদের এ বিষয়টিকে আরও খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন করা উচিত।