১০/১১/২০২৫, ২২:৩০ অপরাহ্ণ
25 C
Dhaka
১০/১১/২০২৫, ২২:৩০ অপরাহ্ণ
বিজ্ঞাপন

মামদানিকে ঠেকাতে নিজ দলের বিপক্ষে গেলেন ট্রাম্প

বিজ্ঞাপন

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে বামপন্থি প্রার্থী জোহরান মামদানিকে নির্বাচিত না করতে ভোটারদের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি, মামদানি মেয়র নির্বাচিত হলে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ নিউইয়র্কে আসতে দিতে চাইবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। একই সাথে, নিজে রিপাবলিকান দলের হলেও ডেমোক্র্যাট পার্টির সদস্য যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন, সেই অ্যান্ড্রু কুওমোকে সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি বলেন, ‘আপনি ব্যক্তিগতভাবে অ্যান্ড্রু কুওমোকে পছন্দ করুন বা না করুন, আপনার আসলে কোনো বিকল্প নেই। আপনাকে অবশ্যই তাকে ভোট দিতে হবে এবং আশা করি তিনি দুর্দান্ত কাজ করবেন।’ সোমবার সন্ধ্যায় সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এমন একটি পোস্ট করেছেন ট্রাম্প। লিখেছেন, ‘তিনি এটি করতে সক্ষম, মামদানি নন!’

বহুল আলোচিত নির্বাচনের মাত্র কদিন আগে ট্রাম্পের এই সমর্থন এলো, যিনি এক সময় নিউইয়র্কের গভর্নর ছিলেন। এর আগে রোরবার একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছিলেন, মামদানি নির্বাচিত হলে তিনি তার শহর নিউইয়র্কে ফেডারেল তহবিল পাঠানো বন্ধ করবেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আপনার নিউইয়র্ক পরিচালনাকারী যদি একজন কমিউনিস্ট হয়, তাহলে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার জন্য নিউইয়র্কে প্রচুর অর্থ দেওয়া কঠিন হবে, কারণ আপনি সেখানে পাঠানো অর্থ কেবল নষ্টই করছেন।’ জনমত জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী মামদানি কুওমোর চেয়ে এগিয়ে। ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে মামদানির কাছে হেরে যাওয়ার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কুওমো। তাদের দুইজনের চেয়েই পিছিয়ে আছেন রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াও। ট্রাম্প, যিনি নিজেও একজন রিপাবলিকান, তার পোস্টে স্লিওয়াকে সমর্থন করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছিলেন, ‘কার্টিস স্লিওয়ার পক্ষে ভোট মানে মামদানির পক্ষেই ভোট’।

ফেডারেল তহবিল সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘মামদানি নির্বাচিত হলে, প্রয়োজনীয় ন্যূনতম পরিমাণ ছাড়া, আমার ফেডারেল তহবিলের অবদান রাখার সম্ভাবনা খুবই কম’। ট্রাম্প প্রশাসন বারবার ডেমোক্র্যাট-শাসিত এলাকায় অবস্থিত প্রকল্পগুলোর জন্য ফেডারেল অনুদান এবং তহবিল হ্রাস করার চেষ্টা করেছে। নিউইয়র্ক সিটি এই অর্থবছরে ৭.৪ বিলিয়ন ডলার ফেডারেল তহবিল পেয়েছে।

রোববার সিবিএসের সিক্সটি মিনিটস অনুষ্ঠানের সাথে এক বিস্তৃত সাক্ষাৎকারে মামদানি সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, মেয়র মামদানি নিউ ইয়র্ক সিটির সাবেক বামপন্থি মেয়র বিল ডি ব্লাসিওর মতোই হবেন, ‘চমৎকার দেখাবে’। আমি ডি ব্লাসিওকে দেখেছি তিনি কতটা খারাপ মেয়র ছিলেন। এই লোকটি ডি ব্লাসিওর চেয়েও খারাপ কাজ করবে। 

ট্রাম্প নিউইয়র্কের কুইন্স বরোতে বেড়ে উঠেছেন এবং এখনও ওই শহরে তার সম্পত্তি রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি কোনোভাবেই কুওমোর ভক্ত নই। তবে যদি এটি একজন খারাপ ডেমোক্র্যাট এবং একজন কমিউনিস্টের মধ্যে হয়, তাহলে আপনার সাথে সৎ হতে, আমি সর্বদা খারাপ ডেমোক্র্যাটকেই বেছে নেব।’ 

মামদানি, যিনি নির্বাচিত হলে একটি বিশ্ব আর্থিক কেন্দ্র পরিচালনা করবেন, তিনি একজন স্ব-ঘোষিত গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক, যদিও তিনি নিজেকে কমিউনিস্ট বলে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে রসিকতা করে বলেছেন যে তিনি ‘একটু স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাজনীতিকের মতো’ কেবল আরেকটু স্পষ্টবাদী।

মামদানি ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে জিতেছেন, আর কুওমো দ্বিতীয় হয়েছেন। ৩৪ বছর বয়সী এই নেতা নিউ ইয়র্কের সাবেক গভর্নরকে ট্রাম্পের ‘পুতুল’ এবং ‘তোতাপাখি’ বলে অভিহিত করেছেন। ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি মানেই সিটি হলে তার প্রতিচ্ছবি তৈরি করা নয়’ সোমবার মামদানি বলেন।

তিনি বলেন, ‘এটি এমন একটি বিকল্প তৈরি করা যেখানে নিউ ইয়র্কবাসী তাদের নিজস্ব শহরে যা দেখতে চায় এবং তারা প্রতিদিন নিজেদের ও তাদের প্রতিবেশীদের মধ্যে যা খুঁজে পায় তার সাথে কথা বলতে পারে – এমন একটি শহর যা এই জায়গাটিকে যারা বাড়ি বলে তাদের প্রত্যেকের মর্যাদায় বিশ্বাস করে।’

এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট অভিজ্ঞ একমাত্র প্রার্থী হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন কুওমো। এমনকি সেই আক্রমণাত্মক ধারাকে প্রতিহত করার চেষ্টার কথাও বলছেন তিনি। কোভিড-১৯ মহামারির সময় তিনি নিউ ইয়র্কের গভর্নর ছিলেন, যখন অনেক রাজ্য ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল। যদিও রাজ্য তদন্তকারীরা যখন আবিষ্কার করেছিলেন যে প্রাদুর্ভাবের সময় নার্সিং হোমে মৃত্যু উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা হয়েছিল, তখন কুওমো নিজেও তদন্তের মুখোমুখি হন।
‘আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে লড়াই করেছি,’ কুওমো একটি বিতর্কের সময় বলেছিলেন। ‘যখন আমি নিউইয়র্কের জন্য লড়াই করছি, তখন আমি থামব না’।

অপরাধ দমনের অংশ হিসেবে ডেমোক্র্যাট-নেতৃত্বাধীন শহরগুলোতে ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েন করেছেন ট্রাম্প, একই সাথে সহযোগিতা সীমিত করে ফেডারেল অভিবাসন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাদের বিচারব্যবস্থার তহবিলও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

পড়ুন: নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচনে ভোট আজ, জরিপে এগিয়ে মামদানি

দেখুন: গাইবান্ধায় প্রস্তুত দুই লাখ কোরবানির পশু, দাম নিয়ে শঙ্কায় খামারি |

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

বিশেষ প্রতিবেদন