নারায়ণগঞ্জের বন্দরে গরুর হাটের ইযারা কে কেন্দ্র করে মিথ্যা সংবাদ এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করলেন যুবদল নেতা এস এম মোমেন।
বুধবার (১৪ মে) সকাল ১১টায় বন্দর উপজেলার মদনপুর বাস স্ট্যান্ডে ভোজন বিলাস চাইনিজ রেস্টুরেন্টে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠকালে তিনি উল্লেখ করেন যে, আমি এস এম মোমেন, পিতাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ, গ্রামঃ ফুলহর, পোঃ মদনপুর, থানাঃ বন্দর, জেলাঃ নারায়ণগঞ্জ। আমি ছাত্রজীবনে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৭নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলাম এবং নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের শিল্প বিষয়ক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছি। আমাদের সমগ্র পরিবারের সদস্যরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের রাজনীতিকে ভালোবাসে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারুন্যের অহংকার তারেক রহমানকে ভালোবেসে যুবদলের রাজনীতি করেছি। যুবদল করার কারণে একাধিক হামলা, মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছি। কিন্তু দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হইনি। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি এবং যুবদলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে আমাকেও স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার গায়েবি ও বিস্ফোরক মামলায় আসামী করেছে। সে মামলায় ২০১৭ সালে গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছি। ২০২৩ সালে সোনারগাঁয়ের বস্তল এলাকায় বিএনপির ডাকা হরতালে গাড়ি পোড়ানো মামলায় আমাকে ও আমার বড় ভাই আল আমিনকে আসামী করা হয়েছে। ২০২৩ সালে ফুলহর স্কুলের সামনে টায়ার পোড়ানোর মামলায় আমাকে আসামী করা হয়েছে। ২০২২ সালে ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে অংশ নিতে মদনপুর থেকে বাসে করে যাবার সময় মৌচাকে বাস থামিয়ে আমাকে পুলিশ গ্রেফতার করে এবং এর কারনে সারাদিন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় আমার সাথে আরো ১৩ জনকে আটক করে রাখা হয়। যুবদল করার কারণে ২০২৩ সালে ফুলহরে আমাদের বাসায় ও অফিসে পুলিশ হামলা চালায় যার ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে এখনো আছে। ২০২৩ সালে ফুলহরে পুলিশ বেরিকেড দিয়ে গকুলদাসের বাগের মোমেন ভূঁইয়াকে আটক করে আমাকে আটক করতে পেরেছে ভেবে পুলিশ উল্লাস করতে থাকে। পরে তার প্রকৃত পরিচয় পেয়ে তাকে ছেড়ে দেয়। তাহলে বুঝে নেন আমাকে আটক করতে পুলিশ কতটুকু মরিয়া হয়ে ছিলো।
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন দিন পূর্বে আমাকে বাড়িতে না পেয়ে আমার মা, বোন ও ছোট ভাইকে পুলিশ আটক করে। আমার ছোট ভাই এর তখন অনার্স ২য় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলমান। এটা জেনে পুলিশ মা ও বোনকে রেখে তাকে ধরে নিয়ে যায়। আমাদের পরিবারের উপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ব্যাপক নির্যাতন চালাতে থাকে। উপায় না পেয়ে তাদের অত্যাচার থেকে পরিবারকে রক্ষা করতে মনের অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন কুটকৌশল এর মাধ্যমে মদনপুরে একটি অনুষ্ঠানে যুবলীগ নেতা অহিদের সাথে মিছিলে অংশ নিতে বাধ্য করা হয় এবং বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদের হাতে ফুলের তোড়া দেয়ার জন্য বাধ্য করা হয়।
কিন্তু তারপর ২০১৯ থেকে আজ পর্যন্ত আমি আওয়ামী লীগের কোন মিটিং মিছিলে অংশ নেইনি এবং ফুল দেয়ার ছবি ছাড়া আমার কোন ফুটেজ কেউ দেখাতে পারবে না। সে ঘটনার পর থেকে আমি বিএনপির মিটিং মিছিলে নিজ উদ্যোগে অংশ নিয়েছি। আমি ও আমার পরিবারের লোকজন হামলা ও মামলার শিকার হয়েছি। অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছি। কিন্তু বর্তমানে আমাকে আওয়ামী লীগ নেতা বানানোর পায়তারা করা হচ্ছে।
আমার বাবা জনাব শহীদুল্লাহ তিনি জিয়াউর রহমানের আমল থেকে বিএনপির রাজনীতি করে আসছেন ও আমার বড় ভাই নারায়ণগঞ্জ মহানগর কৃষক দলের সহ-সভাপতি। আমার চাচা শফিউল্লাহ তিনি হার্টের রোগী, হার্টে রিং পড়ানো এবং ওপেন হার্ট সার্জারী করা হয়েছে। তিনি কোন দলের রাজনীতি করেন না। কিন্তু তার নামেও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
গত কয়েকদিন কয়েকটি পত্রিকায় নিউজ লিখা হয়েছে যে, আমি যুবলীগ নেতা অহিদের সহযোগি এবং তার ব্যবসা আমি নিয়ন্ত্রণ করি। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। অহিদ আমাদের সাথে পার্টনারশিপে ব্যবসা করতো। এই ব্যবসার লাইসেন্স আমার ও শাহিনের নামে ছিলো। পরবর্তীতে কৌশলে আমাদের কাছ থেকে হিসাব ও হিসাবের খাতা নিয়ে নেয় এবং ষড়যন্ত্র করে ব্যবসার লাইসেন্স অহিদ তার ও তার চাচাতো ভাই আমজাদ এর নামে ট্রান্সফার করে নেয়। আর আমাকে তারা কোন প্রকার হিসাব প্রদান করা বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে আমি পরিবারিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি।
ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে মদনপুর থেকে মদনগঞ্জ সড়কের পূর্ব পাশে আমাদের এলাকার শিল্পপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন তিনি তার ব্যক্তিগত বালুর মাঠে পশুর হাট বসানোর জন্য অনুমতি দিয়েছেন। তিনি কিন্তু আমাকে মেনশন করে অনুমতি দেননি। হাটের শিডিউল বিক্রি হবে, যে বেশী দর দিবেন সেই দরদাতা হাটের ইজারা পাবেন। কিন্তু তিনি তো আমাকে হাটটি দেননি। অথচ আমার বিরুদ্ধে পত্রপত্রিকায় নানানভাবে নিউজ ছাপা হচ্ছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও হতাশাব্যঞ্জক। নিউজে নানানভাবে আমার বিরুদ্ধে অসত্য তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এই ভ্রান্ত ও ভুল তথ্যভিত্তিক নিউজের কারণে পাঠক বিভ্রান্ত হয়েছে এবং সমাজে আমার মান ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে ।
তাছাড়া হাটের অনুমতি দেয়া হয়েছে রাস্তার পূর্ব পাশের বালুর মাঠে অথচ রাস্তার পশ্চিম পাশে সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ট্রাক স্ট্যান্ডে হাট দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে বারংবার নিউজ লিখা হয়েছে যা খুবই হতাশাজনক।
সাংবাদিক ভাইয়েরা আমরা আপনাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান করি। আপনারা সমাজের আয়না। অনুরোধ রইলো আরো সঠিক তথ্য নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করবেন।
এনএ/