আওয়ামী লীগ বলেছিলো মেট্রোরেলের মীরপুর ১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন চালু করতে সময় লাগবে এক বছর। খরচ হবে ৩০০ কোটি। আদতে এই দুই স্টেশন চালু হয়েছে মাত্র তিন মাসর ব্যবধানে। আর খরচ হয়েছে এক কোটি ২৫ লাখ টাকা।
কি হয়েছিলো মিরপুর ১০ এবং কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশনে:
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৮ জুলাই বিকালে বন্ধ হয়ে যায় মেট্রোরেল। পরদিন মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামলা চালানো হয় পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনেও। এরপর থেকেই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এক মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ২৫ অগাস্ট মেট্রোরেল চালু করা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন দুটি চালু করা যাচ্ছিল না। মেরামত শেষে প্রথমে যাত্রী চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় কাজীপাড়া।
তখন যা বলেছিলো ওবায়দুল কাদের
এর আগে এই দুটি স্টেশন ঠিক করতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ও ১ বছর সময় লাগবে এমন বলা হয়েছিল। কেন এমন বলা হয়েছিল এই প্রশ্নে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, “যিনি বা যারা এগুলো বলছিলেন তাদের থেকে এই বিষয়ে জানতে।”
মেট্রোরেলের দুই স্টেশন চালু করতে কত সময় লাগলো?
১৯ জুলাই মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এরপরই দীর্ঘ সময়ের জন্য অনিশ্চিত হয়ে যায় মেট্রোরেল চলাচল। ৩৭ দিন বন্ধ থাকার পর গত ২৫ আগস্ট ফের চালু হয় মেট্রোরেল। তবে, বন্ধ রাখা হয় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশন। এরও ২৬ দিন পর কাজীপাড়া স্টেশন চালু করা হয়। আর ৩ মাসেরও কম সময় অর্থাৎ ২ মাস ২৭ দিনের ব্যবধানে চালু হলো মিরপুর-১০ স্টেশন।
কিভাবে ঠিক করা হলো দুইটি স্টেশন?
ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের এর কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলছেন কোন সরঞ্জাম দেশের বাইরে থেকে আনতে হয়নি। বরং লোকাল যেসব রিসোর্স ছিল সেগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশন থেকে কিছু জিনিস নেওয়া হয়েছে।
কত টাকা খরচ হলো দুইটি স্টেশন সচল করতে?
সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা জানিয়েছেন, মেরামত করতে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এখানে কিছু ক্ষতিগ্রস্ত যন্ত্রপাতির বদলে অন্য দুটি স্টেশনের অব্যবহৃত যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু অন্য দুটি স্টেশনের যন্ত্রপাতি আনা হলে কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ মেট্রোরেল স্টেশন মেরামতের চূড়ান্ত ব্যয় প্রায় ১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকায় দাঁড়াবে বলে জানান উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
মেরামতের এই অর্থ কারা দিবে?
মেরামত কাজের জন্য তারা সরকারের কাছে অর্থ চাইবেন না। অর্থাৎ এই দুটি স্টেশন ঠিক করতে নতুন করে সরকার থেকে টাকা নেবে না ডিএমটিসিএল। ব্যয়ের ১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানির তহবিল থেকে দেয়া হবে বলেও জানান উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
মেট্রোরেলে লাভ হলো নাকি এখনো লোকসান?
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে ২৫ আগস্ট থেকে চালু হওয়ার পর ৩১ আগস্ট পর্যন্ত আয় হয়েছে ৫ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে আয় হয়েছে ৩৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আর দিনে গড়ে আয় হয়েছে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা। অক্টোবরে প্রথম ১৩ দিনে আয় হয়েছে ১১ কোটি ২২ লাখ টাকা। আর দিনে গড় আয় ৮৬ লাখ টাকা। অক্টোবরে চার দিনে ছুটি থাকায় রাজস্ব আয় একটু কম হয়েছে। মেট্রোরেলের লাভ ক্ষতি নিয়ে ২০২৫ সালের পর এ তথ্য বলা যাবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তখন পুরোপুরি কমলাপুর পর্যন্ত চালু হবে।”