মেহেরপুরে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের মাঠজুড়ে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে মাজরা পোকা। এতে বিপাকে পড়েছেন জেলার হাজার হাজার কৃষক। বারবার বালাইনাশক প্রয়োগ করেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ফলাফল। পোকায় ধানের কঞ্চি (বাইল) কেটে ফেলায় গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে, ক্ষেত হারাচ্ছে প্রাণ। ফলে ধান ঘরে তোলা তো দূরের কথা, অনেক জমিতে এখনো সবুজ পাতাও অবশিষ্ট নেই।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মেহেরপুর জেলায় মোট ১৯ হাজার ৪২৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২ হাজার হেক্টর বেশি। তবে অধিকাংশ জমিতেই এখন দেখা দিয়েছে মাজরা পোকার ব্যাপক আক্রমণ।
স্থানীয় কৃষক ইদ্রিস আলী বলেন, আমরা বারবার ওষুধ দিচ্ছি, কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, এভাবে চললে পুরো ফসলই শেষ হয়ে যাবে।
আরেক কৃষক জালাল উদ্দিন ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, বাজার থেকে দামি ওষুধ কিনে ছিটিয়েছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। কৃষি অফিসেও গেছি, সেখান থেকেও তেমন সাহায্য পাইনি। এখন ঋণ শোধ করবো কিভাবে, সেই চিন্তায় ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
একই সুরে কথা বলেন কৃষক ওমর ফারুক। তিনি জানান, এই ধান ছিল আমাদের সারা বছরের খরচের একমাত্র ভরসা। মাজরা পোকায় সব শেষ করে দিচ্ছে। যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা পথে বসে যাবো।
রায়পুর গ্রামের কৃষক আব্দুল আলিম জানান,বোরো ধান চাষে প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকদের খরচ হয় প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। জমি চাষ, চারা রোপণ, সেচ, সার ও ওষুধ—সব মিলিয়ে তারা এখনো আশায় বুক বেঁধে ছিলেন, কিন্তু পোকামাকড়ের এই হানায় তাদের সে স্বপ্ন আজ ভেঙে পড়েছে। অধিকাংশ কৃষক বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এবার ‘বিচালী ছাড়া কিছুই পাওয়া যাবে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদারের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ক্যামেরার সামনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
পড়ুন: মেহেরপুরে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত ১, গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ
দেখুন: মানুষের রিজিক নষ্ট করে, এ কেমন শত্রুতা!
ইম/