39.8 C
Dhaka
শুক্রবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৫

যশোরে জন-পাঠাভ্যাস সৃষ্টিতে সাধারণের মাঝে বই উপহার ও আলোচনা সভা

একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত সমাজ গঠনের মূল ভিত্তি হলো জ্ঞানার্জন, আর জ্ঞান অর্জনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো বই পড়া। বইয়ের আলো ছাড়া কোনো সমাজই প্রকৃত উন্নতির পথে এগোতে পারে না। সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে জন-পাঠাভ্যাস তৈরি করতে পারলে সমাজ উন্নত হবে এই উপলব্ধি থেকে ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ সংগঠনের উদ্যোগে শুক্রবার বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে যশোরের ক্যান্ডেল লাইট ক্যাফেতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘উন্নত সমাজ বিনির্মাণে জন-পাঠাভ্যাসের গুরুত্ব’ শীর্ষক উন্মুক্ত আলোচনা সভা ও ‘আলোক-সহযাত্রী সম্মিলন ২০২৫’।

পাঠাভ্যাস শুধু ব্যক্তি উন্নয়নের জন্যই নয়, এটি মানুষের চিন্তাকে প্রসারিত করে, সৃজনশীলতা বাড়ায় এবং নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ গঠনে সহায়ক হয়। ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ সংগঠন এই উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে বইয়ের প্রতি আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা শাহ্‌জাহান কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পাঠচক্রবন্ধু অপু দেবনাথ ‘উন্নত সমাজ বিনির্মাণে জন-পাঠাভ্যাসের গুরুত্ব’ শীর্ষক আলোচনার সূত্রপাত করেন এবং উপস্থিত আলোচকেরা বই পড়ার গুরুত্ব, অংশীজনের ভূমিকা, পাঠাভ্যাসের প্রয়োজনীয়তা, ব্যক্তিগত উন্নয়ন, সামাজিক পরিবর্তন এবং একটি জ্ঞানসমৃদ্ধ সমাজ গঠনে এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মতবিনিময় করে আলোচনাকে এগিয়ে নেন। আলোক-সহযাত্রী সম্মিলনে নিজেরা পরস্পরের সাথে পরিচিত হন এবং সংগঠনের পক্ষ থেকে তাদের সান্নিধ্য, জ্ঞানদান ও সহায়তাকে কৃতজ্ঞতার চিত্তে স্মরণ করা হয়।

এর আগে সকালে জন-পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে, জন-পাঠাভ্যাসে উদ্বুদ্ধকরণে এবং অধিক মানুষকে বইয়ের প্রতি আরও আগ্রহী করে তুলতে অনুষ্ঠানের বিশেষ আয়োজন হিসেবে সপ্তাহে একটি বই পড়ির উদ্যোগে যশোর শহরের রেলস্টেশন, মুজিব সড়ক, সার্কিট হাউস রোড, এম আর রোড, চিত্রার মোড়, দড়াটানা, পালবাড়ি, ধর্মতলার বিভিন্ন পেশা-শ্রেণির মানুষকে বই উপহার প্রদান করা হয়। বই পেয়ে সকলেই অভিভূত হন। বই পেয়ে জনপাঠাভ্যাসে উদ্দীপ্ত হন রিক্সাওয়ালা, ড্রাইক্লিনার্স, ডিম বিক্রেতা, ইজিবাইক চালক, ফল বিক্রেতা, ফুল বিক্রেতা, গার্ডম্যান, দারোয়ান, চা-বিক্রেতা, হোটেল শ্রমিক, ভ্রাম্যমাণ পথচারী, বিশ্রারত যাত্রী, পুলিশের কনস্টেবল, সেলুন মালিক, বাস শ্রমিকসহ নানা পেশার মানুষ।

এ উদ্যোগের বিষয়ে ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মো. শাহ্‌জাহান কবীর বলেন, “বই পড়া কেবল ব্যক্তি উন্নয়নের মাধ্যম নয়, বরং এটি একটি জাতিকে আলোকিত ও সচেতন করার অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। সমাজের উন্নয়নে জন-পাঠাভ্যাস সৃষ্টির মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষকে বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট করতে এবং জ্ঞানের আলোয় তাদের পথ চলাকে আরও প্রশস্ত করতে কাজ করে যেতে চাই।”

পাঠচক্রবন্ধু হরিদাস বিশ্বাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুরাদ হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন দৈনিক কল্যাণ সম্পাদক ও প্রকাশক একরাম-উদ-দ্দৌলা, তালবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ, যশোরের অধ্যক্ষ ড. শাহনাজ পারভীন, সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ, যশোরের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বিদ্যুৎ কুমার কুন্ডু, রূপালি ব্যাংক পিএলসি যশোর কর্পোরেট শাখার এজিএম মো: শহিদুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক আহসান মোহাম্মদ ইকরামুল কবীর, প্রভাষক মেহেদী হাসান, রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন, অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি যশোর বাজার শাখার শাখা ব্যবস্থাপক সেলিম রেজা, তথ্য কর্মকর্তা এলিন সাঈদ-উর-রহমান, উদ্যোক্তা শাহেদ চৌধুরী, কবি মামুন আজাদ প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে দৈনিক কল্যাণের সম্পাদক ও প্রকাশক বীরমুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দ্দৌলা বলেন, আমি দীর্ঘ আটান্ন বছরে সাংবাদিকতা জীবনে বিভিন্ন সময়ে বই পড়া আন্দোলনের সাথে যুক্ত থেকেছি। সপ্তাহে একটি বই পড়ির সদস্যরা নিজেরা বই পড়ার পাশাপাশি জনপাঠাভ্যাসে উদ্বুদ্ধকরণের উদ্যোগে নিয়েছে যেটা নিঃসন্দেহে দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ। পাঠকের চাহিদাভিত্তিক বই প্রদান করতে পারলে সমাজ জ্ঞানে ও চিন্তায় অনেক এগিয়ে যাবে। দৈনিক কল্যাণ পরিবার সবসময় সপ্তাহে একটি বই পড়ির পাশে থাকবে।

পড়ুন : যশোরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন