এবার কানাডা সরকারের নজরদারিতে পড়েছেন বাংলাদেশের দুই শতাধিক নেতা, ব্যবসায়ী ও সরকারী আমলা। বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করে কানাডায় স্থায়ী আবাসন থেকে শুরু করে ব্যবসায় বিনিয়োগ করার এই তালিকায় স্থান পেয়েছে বেশির ভাগ মন্ত্রী, এমপি, ব্যবসায়ী এবং সরকারী আমলা।
কানাডা সরকারের বিশেষ একটি অনুসন্ধানী কমিটি তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে ঐ দেশে বাংলাদেশীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করার তথ্য নিশ্চিত করেছে। আর এসব অর্থের বেশিরভাগই তারা বিনিয়োগ করেছেন জমি ও বাড়ি কেনার মাধ্যমে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংবাদ মাধ্যমের বিশেষ প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়, এক একজন অন্তত ৫ মিলিয়নেরও বেশি ডলার পাচার করেছে এমন কমপক্ষে ১১ জন বাংলাদেশির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ও জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট তদন্ত করছে। এরা সবাই রিয়েল এস্টেট, গ্যাস স্টেশন, রেস্টুরেন্ট এমনকি ক্যাসিনো ব্যাবসায় এই অবৈধ অর্থ বিনিয়োগ করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে দূর্নীতি, মানি লন্ডারিং ও আর্থিক দূর্নীতি সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ফেডারেল এজেন্সি গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও প্রমানাদি জড়ো করছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে এই ১১ জনের বিরুদ্ধে স্যাংশন দেওয়া হতে পারে। আগামীতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। মার্কিন ক্যাপিটলের এক গোপন সূত্র জানিয়েছে, বাইডেন সরকার দূর্নীতি ও আর্থিক অপরাধের বিরুদ্ধে যে আপোষহীন তার দৃষ্টান্ত হিসেবে ম্যাগনিটস্কি অ্যাক্ট – এর আওতায় এই ১১ বাংলাদেশীর উপর স্যাংশন দিতে যাচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে এই সংখ্যা বাড়তে থাকবে।
হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন করে এই ১১ জন সহ দুই শতাধিক বাংলাদেশিদের বিষয়ে কৌতুহল আরও বেড়েছে। কারা তারা? সূত্র দাবি করছে, এই তালিকায় রয়েছে আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন হাইব্রিড মন্ত্রী, এমপি ও ব্যবসায়ীর নাম। তালিকায় খোদ শেখ হাসিনার নামও থাকতে পারে বলে ইংগিত করা হচ্ছে। সর্বশেষ এই তিনটি দেশ শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় বিষয়টি আরও পোক্ত হয়েছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
একইভাবে যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশী সম্পর্কে তদন্ত শুরু করেছে বলা জানা গেছে। ইংল্যান্ডেও এরা একই পন্থায় বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করে নানা খাতে বিনিয়োগ করেছে বলে তথ্য পেয়েছে ব্রিটিশ সরকারের দায়িত্বশীলরা।
এসব অর্থ হাওয়ালা চ্যানেল ব্যবহার করে যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে পাচার হয়েছে। হাওয়ালা চ্যানেলটি টাকা পাঠানোর অবৈধ একটি মাধ্যম। এছাড়া দুবাই এবং বাহামা ও বৃটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের বিভিন্ন অফশোর এ্যাকাউন্ট হয়েও যুক্তরাজ্যে এসব টাকা পাঠানো হয়েছে বলে তথ্য মিলেছে।
বেশ কিছুদিন আগে যুক্তরাজ্যের একটি সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশিদের টাকা পাচার সংক্রান্ত একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঐ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মানি লন্ডারিং-এ জড়িত বাংলাদেশিরা যুক্তরাষ্ট্রে সম্পত্তি বা ব্যবসায় অঢেল অবৈধ টাকা বিনিয়োগ করেছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর বিনিয়োগকারী বাংলাদেশিরা বেশ আতঙ্কে পড়ে যান।