১৪/০৬/২০২৫, ১৩:৪৮ অপরাহ্ণ
35.3 C
Dhaka
১৪/০৬/২০২৫, ১৩:৪৮ অপরাহ্ণ

যুদ্ধ রোমান্টিক নয়, বলিউড মুভিও নয়: ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান

ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি নিয়ে যেসব ভারতীয় নাগরিক সমালোচনা করছেন, তাদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মনোজ নারাভানে। পুনে জেলার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যুদ্ধ কোনো রোমান্টিক ব্যাপার নয়, এটি বলিউডের ছবির মতোও নয়—বরং একটি ভয়ানক বাস্তবতা। তিনি মনে করিয়ে দেন যে সীমান্তবর্তী অঞ্চলের মানুষদের জীবনে যুদ্ধ এক চরম আতঙ্কের নাম, যা তাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তাড়া করে ফেরে।

মনোজ নারাভানে বলেন, যুদ্ধের ফলে মানুষ তাদের প্রিয়জনকে হারান, গৃহহীন হয়ে পড়েন, আর এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা দীর্ঘমেয়াদী মানসিক আঘাত সৃষ্টি করে। মনোজ নারাভানে উল্লেখ করেন, “পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার” (পিএসটিডি) নামের একটি মানসিক অবস্থা রয়েছে, যা ভয়াবহ ঘটনা প্রত্যক্ষ করার ফলে সৃষ্টি হয় এবং আক্রান্তরা বছরের পর বছর এই ট্রমা বহন করেন।

যুদ্ধ নিয়ে যারা উত্তেজনা ছড়াচ্ছেন, তাদের উদ্দেশে সাবেক এই সেনাপ্রধান বলেন, “যুদ্ধ হলে আমি অবশ্যই যাব, যদি নির্দেশ আসে। তবে সেটি কখনোই আমার প্রথম পছন্দ হবে না। আমার কাছে কূটনৈতিক পথই সর্বাগ্রে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, সহিংসতা কখনোই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে না, বরং আলোচনার মাধ্যমেই মতপার্থক্য দূর করা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক এক ভয়াবহ হামলার প্রসঙ্গও উঠে আসে। ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামের একটি উপত্যকায় সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়ে ২৬ জন হিন্দু পর্যটককে হত্যা করে। ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামের একটি জঙ্গিগোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করে। তদন্তে জানা যায়, এটি পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা।

এই ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিকভাবে কঠোর অবস্থান নেয়—সিন্ধু নদীর পানি বণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা, ভিসা বাতিলসহ নানা পদক্ষেপ নেয় নয়াদিল্লি। জবাবে পাকিস্তানও ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়। এমন উত্তেজনার মধ্যেই ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সংক্ষিপ্ত সামরিক অভিযান চালায়, যাতে ভারতের তথ্যমতে ৭০ জন জঙ্গি নিহত হয়। পাকিস্তানের দাবি, এতে ৩১ জন নিহত এবং ৫৭ জন আহত হয়।

এর জবাবে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ (বাংলায়, সীসার প্রাচীর) নামের পাল্টা অভিযান চালায়। এসব সংঘাতের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ করে এবং অবশেষে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, যা শনিবার থেকে কার্যকর হয়।

এই প্রেক্ষাপটে নারাভানে আবারও স্মরণ করিয়ে দেন—যুদ্ধ উদযাপনের কিছু নয়, বরং তা হওয়া উচিত সবশেষ এবং অনিচ্ছাকৃত পদক্ষেপ।

এনএ/

দেখুন: ৮ কারণে ৪ বার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ!

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন