নির্বাচন কমিশন গঠন করার মাধ্যমে ভোটের প্রক্রিয়া শুরুর প্রথম ধাপ সম্পন্ন করা হলেও ‘যদি’ ‘কিন্তু’ ‘তবে’ যেন রয়েই গেলো। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, কমিশনের সদস্যরা শপথও নিয়েছেন। বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দল নতুন কমিশনারদের বিষয়ে কোন আপত্তি না তুললেও তাদের প্রতি আস্থা রাখতে পারছেনা নাগরিক কমিটি। কিন্তু কেন?
নতুন কমিশনকে প্রত্যাখ্যান করেছে নবগঠিত রাজনৈতিক সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটি। এই কমিশনের প্রতি আস্থা না রাখার কারণ হিসেবে নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন লিখিত বক্তব্যও দিয়েছেন। সংগঠনটির সদস্য নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী এবং অখতার হোসেনও একই বিষয় বক্তব্য রাখেন।
তাদের ভাষ্য, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী নতুন আইন প্রণয়ন করে কমিশন গঠন করতে হবে। কেননা গণহত্যাকারী আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার প্রণীত আইন-কানুনের অধীনে ইসি গঠন করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে কলঙ্কিত করেছে। সুতরাং,আওয়ামী লীগের প্রণিত আইনই তাদের মূল আপত্তির জায়গা।

সংগঠনটির নেতারা বলেন, গত ১৫ বছরে নির্বাচন কমিশন ফ্যাসিবাদের ভূমিকায় ছিলো। এই পচাগলা নির্বাচন কমিশন এবং কমিশনের কায়দা কানুন সঠিকভাবে পুনর্বিন্যাস না করে আগামী ভোট হলে শহীদদের রক্ত এবং গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে বেইমানি হবে।
এ প্রসঙ্গে তারা বলেন রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের সফল হওয়ার পর ছাত্রদের পছন্দমত ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমরা প্রতিনিয়ত আশাহত হচ্ছি, বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছি। সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট জমা ও সংস্কার হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশে কোনো কিছুর আয়োজন করতে দেব না। গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের ব্যত্যয় হলে আমরা আবার মাঠে ফিরে যাব।

সংগঠনের সদস্য নাসীর বলেন, প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছি রাজনৈতিক দলগুলো টেন্ডার-চাঁদাবাজিতে জড়িয়েও ত্বরিতগতিতে ভোটের দিকে যাত্রা শুরু করতে চাইছে। অথচ রাজনৈতিক দলগুলো ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে জনগণের অভ্যুত্থানের ম্যান্ডেট বজায় রাখুক, এটাই কাম্য। নইলে জনগণ যে কোনো দলের বিরুদ্ধে আবার দাঁড়াতে বাধ্য হবে।
সামান্তা শারমিন আরও বলেন, ২০২২ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে প্রণীত আইনটি বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রত্যাখ্যান করেছিল। আমরা অবাক হয়েছি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও ঐ আইনের অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি গঠন করে। জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আইনটি বাতিল করাটাই যুক্তিযুক্ত ছিল। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনও আইনটি বদলানোর পক্ষে। তারা ইতোমধ্যে একটি নতুন আইনের খসড়াও তৈরি করেছে, যা সরকারের কাছে পাঠানোর প্রক্রিয়াধীন।
এনএ/