রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় তিন গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির রমনা মডেল থানা পুলিশ। এ সময় চুরির ৩১ ভরি ৪ আনা ৫ রতি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন তানজিনা আক্তার ফারিয়া, মোসা. কহিনুর বেগম এবং মোছা নাজমা আক্তার ওরফে লাইজু।
আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সারোয়ার জাহান।
ডিসি বলেন, গত ১৬ আগস্ট ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে জনৈক রোখসানা মজুমদার ব্যাংকের লকারে গচ্ছিত স্বর্ণালংকার এনে নিজের ১১৬/এ, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, ইস্কাটন গার্ডেন, রমনার বাসার আলমারিতে রাখেন। পরবর্তীতে গত ০৮/১০/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে গহনা দেখার জন্য আলমারির মধ্যে থাকা ব্যাগ খুলে দেখেন যে, ব্যাগের মধ্যে থাকা ৪৪ ভরি স্বর্ণালংকার ও ডায়মন্ডের ৫টি আংটি নাই যার আনুমানিক মূল্য ৫২,০০,০০০ (বায়ান্ন লক্ষ) টাকা। এ সংক্রান্তে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর ২০২৪) বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে রমনা মডেল থানায় একটি চুরির মামলা রুজু করা হয়। মামলায় বাসার স্থায়ী গৃহকর্মী তানজিনা আক্তার ফারিয়া ও মোসা. কহিনুর বেগম এবং অস্থায়ী গৃহকর্মী মোছাঃ নাজমা আক্তার ওরফে লাইজুকে এজাহার নামীয় আসামি করা হয়।
সারোয়ার জাহান বলেন, মামলা হওয়ার পর রমনা থানা পুলিশ তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে কাকরাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে চুরির সাথে জড়িত সন্দেহে গৃহকর্মী তানজিনা আক্তার ফারিয়া ও মোসাঃ কহিনুর বেগমকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দুইজনকে গতকাল শুক্রবার বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হলে তানজিনা আক্তার ফারিয়া বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন যে, তিনিসহ গ্রেপ্তারকৃত মোসা. কহিনুর বেগম ও মোছা নাজমা আক্তার লাইজু এ চুরির ঘটনার সাথে জড়িত ছিল। বিজ্ঞ আদালত মোসা. কহিনুর বেগম এর ০২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে আসামীর দেখানো মতে বাদীর বাসার গৃহকর্মীদের শয়ন কক্ষ থেকে ৮ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে ১১০/এ, নিউ ইস্কাটন রোড, রমনার ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাতে মোছাঃ নাজমা আক্তার লাইজুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে ১৬ ভরি ১৫ আনা ৪ রতি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারের জন্য গ্রেপ্তারকৃত লাইজুকে নিয়ে কারওয়ান বাজারের স্বর্ণ মার্কেটে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে অনন্যা জুয়েলার্স থেকে গলিত অবস্থায় ২ ভরি ১২ আনা ৪ রতি এবং নুসরাত জুয়েলার্স থেকে গলিত অবস্থায় ৩ ভরি ৮ আনা ৩ রতি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। উল্লেখিত চুরির মামলায় রমনা মডেল থানা কর্তৃক মোট ৩১ ভরি ৪ আনা ৫ রতি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে।
অবশিষ্ট চোরাই স্বর্ণালংকার উদ্ধার এবং ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।