রাজধানীর বনানীতে এক নারী পোশাক শ্রমিক নিহত হওয়ার পর তার সহকর্মীরা সড়ক অবরোধ করেছেন। এতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিশেষ করে রোজার দিনে যানজটের কারণে অফিসগামী এবং সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে।
সোমবার সকালে বনানী এলাকায় ঘটে যাওয়া ট্রাকচাপার ঘটনায় একজন নারী পোশাক শ্রমিক নিহত এবং দুজন আহত হন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পোশাক শ্রমিকরা বনানী চেয়ারম্যানবাড়ি সড়ক অবরোধ করেন। তারা দুপুর ১২টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ রাখেন, যার ফলে পুরো ঢাকা শহরের যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
এদিন মিরপুর, খিলগাঁও, ফার্মগেট, মহাখালী, গুলশান, শাহবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। মোহাম্মদপুর, মগবাজার, রামপুরা, বাড্ডা ও গুলিস্তান এলাকায় যানজট এমনই ভয়াবহ হয়ে ওঠে, যে যানবাহনের চাকা একটুও নাড়ানো যায়নি। এর ফলে অফিসগামী ও সাধারণ যাত্রীদের নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
ফাতেমা আক্তার নামে এক অফিসগামী নারী জানান, “সকাল ৮টায় বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশে বের হয়েছি। কিন্তু বনানীর কাছে আসতেই দেখি রাস্তা বন্ধ। ফুটপাতে হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করলেও সেখানে ভিড় এতই বেশি ছিল যে হাঁটতেও পারিনি। এখনো অফিসে পৌঁছাতে পারিনি।” একইভাবে রিয়াজ হোসাইন নামে এক ব্যক্তি বলেন, “আজকের যানজট অন্যদিনের তুলনায় অনেক বেশি তীব্র ছিল। আমার অফিসে যেতে ৩০ মিনিটের বদলে আজ ২ ঘণ্টা সময় লেগেছে।”
গার্মেন্টস শ্রমিকদের অবরোধের ফলে বনানী এলাকা ছাড়াও আশপাশের এলাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়েছে খিলগাঁও, ফার্মগেট, মহাখালী, মগবাজার, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায়। রোজার দিনযাপনে মানুষের জন্য এটি অতিরিক্ত ভোগান্তি তৈরি করেছে। বিশেষ করে গরমের কারণে যানজটে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজন আরো অসহ্য হয়ে পড়েছেন।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সারোয়ার জানান, “আজ সকাল থেকে গার্মেন্টস শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছেন। আমরা তাদের বুঝানোর চেষ্টা করছি যাতে তারা রাস্তা থেকে সরে আসে। যাতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণভাবে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”
তবে, কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানিয়েছে, গুলশান বিভাগের ট্রাফিক পুলিশ সড়ক যোগাযোগের জন্য কিছু ডাইভারশন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। গুলশান-১ থেকে গুলশান-২ এবং আমতলী দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে, তবে এতে তেমন কোনো সুবিধা মিলছে না।
এদিকে, স্থানীয় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বনানী সড়কে যে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, তাতে নিহত নারী পোশাক শ্রমিকের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে এবং অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে।

সামগ্রিকভাবে, রাজধানী ঢাকা আজ যে ধরনের যানজটের সম্মুখীন হয়েছে,
তা শহরের স্বাভাবিক চলাচলের জন্য বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে রোজার মাসে অফিসগামী ও সাধারণ মানুষদের ভোগান্তি কয়েকগুণ বেড়েছে। এই পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
পড়ুন: রাজধানী থেকে হিযবুত তাহরীরের তিন সদস্য গ্রেপ্তার
দেখুন: ধ/র্ষ/ণে/র বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধের দাবিতে উত্তাল রাজধানী
ইম/