পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের একাধিক ধারা লঙ্ঘন, কৃষি জমি দখল করে খামার স্হাপন এবং কোন ধরনের অনুমোদন না থাকার অভিযোগে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ভিক্টর ভিলেজ হ্যাচারী লিমিটেডকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৪ মে) দুপুরে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে এ জরিমানা আদায় করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন- রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ আহমেদ। অভিযান পরিচালনায় সহায়তা করেন গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান, রাজবাড়ী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. হারুন-অর-রশিদসহ রাজবাড়ী পুলিশ লাইন ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের একটি দল।
স্হানীয়রা জানান- দীর্ঘদিন ধরে হ্যাচারীটি পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও জনগনের দুর্ভোগের বিষয়টি তোয়াক্কা না করে উপজেলার পশ্চিম উজানচর মইজউদ্দিন মন্ডল পাড়া এলাকায় বৃহৎ পরিসরে হ্যাচারী ও খামার পরিচালনা করে আসছিল। খামারটির কারনে এলাকার শতশত বিঘা আবাদি জমি নষ্ট হয়ে গেছে। কোন সীমানা প্রাচীর না থাকায় খামারের বর্জ,মরা মুরগি,ডিম ও বিষ্ঠা সহজেই শেয়াল,কুকুর,কাকে আশপাশ এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয়।
সরেজমিন, বুধবার অভিযোগ পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখতে পান, হ্যাচারী ফার্মটি সঠিকভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ছাড়াই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যার ফলে আশপাশের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া নির্ধারিত অনুমোদন ছাড়াই পরিবেশ সংবেদনশীল এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনার প্রমাণও পাওয়া যায়।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান বলেন, ভিক্টর ভিলেজ হ্যাচারীতে দুইটি সেডের অনুমোদন থাকলেও সেখানে কাউকে না জানিয়ে আরো আটটি সেড নির্মাণ করা হয়েছে।আজকে যাচাই বাছাই করে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগ গোয়ালন্দ,প্রাণী সম্পদ দপ্তর,পরিবেশ অধিদপ্তর মিলে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন।
ভিক্টর ভিলেজ হ্যাচারীটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ রুহুল আমিন বলেন, আমি মনে করি আমার হ্যাচারীর মতো এতো পরিস্কার – পরিছন্ন হ্যাচারী ফরিদপুরও রাজবাড়ীতে একটিও নেই।আসলে এর মুল কারন হলো কিছু মানুষ আমাকে ক্ষতি করতেই এমন ষড়যন্ত্র করে এগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নাহিদ আহমেদ নাগরিক টিভিকে বলেন, ভিক্টর হ্যাচারিজ কতৃপক্ষকে আজকে জরিমানা করে সতর্ক করা হয়েছে। তারা অবস্থার উন্নতি না ঘটালে ভবিষ্যতে হ্যাচারীজটি স্হায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে। পরিবেশ সংরক্ষণে সরকারের কঠোর অবস্থানের অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য- এর আগে গত ৭ মে স্থানীয় ভুক্তভোগী , কয়েকশ এলাকাবাসী মরা মুরগীর বিষ্ঠা,পঁচা ডিমের গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাযালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
এনএ/