১৪/০৬/২০২৫, ১৭:১৩ অপরাহ্ণ
34.6 C
Dhaka
১৪/০৬/২০২৫, ১৭:১৩ অপরাহ্ণ

রাশিয়াকে স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাবে ইরান!

রাশিয়াকে স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের লঞ্চার পাঠাবে ইরান।

গতকাল শুক্রবার (০৯ মে) দুজন পশ্চিমা নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও একজন আঞ্চলিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, ইরান শিগগিরই রাশিয়াকে স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের লহ্ছার সরবারহের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তেহরান গতবছর রাশিয়াকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছিলো।

Fath-360 নামের এই লঞ্চার রাশিয়ার হাতে গেলে তারা ইউক্রেনের ওপর দীর্ঘস্থায়ী আক্রমনে সহায়তা করবে। এছাড়াও মস্কো ও তেহরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা সম্পর্ক আরো জোরদার করবে এই লঞ্চার। বিশ্লেষকরা জানায়, প্রায় ১২০ কিমি পাল্লার Fath-360 রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে ইউক্রেনীয় ফ্রন্টলাইনে, সামরিক স্থাপনায় ও সীমান্তের কাছাকাছি জনবসতিতে হামলার সুযোগ করে দিবে।

গতবছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছিলো, ইরান নয়টি রাশিয়ান পতাকাবাহী জাহাজে এসব ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছিলো। তবে নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ায় লঞ্চারগুলো গন্তব্যে পৌঁছতে পারেনি। পশ্চিমা নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক কর্মকর্তারা জানান, Fath-360 লঞ্চার দ্রুতই রাশিয়ায় পৌছে যাবে। তবে এই লঞ্চারগুলো আগে কেন পাঠানো হয়নি সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

তবে রাশিয়া ও ইরানের দাবি, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে সাহায্য করতে তেহরান ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য কোনো অস্ত্র পাঠায়নি। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, রাশিয়াকে হাজার হাজার ড্রোন ও গোলাবারুদ সরবরাহ করেছে ইরান।

মার্কিন সেনাবাহিনীর জেনারেল ক্রিস্টোফার ক্যাভোলি সম্প্রতি কংগ্রেসে বলেছেন, ইরান রাশিয়াকে ৪০০-র বেশি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে, যা সম্ভবত Fath-360-এর কথাই নির্দেশ করে। ইরান Fath-360 ছাড়া অন্য কোনো স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়াকে সরবরাহ করেছে বা রাশিয়া সেগুলো ব্যবহার করেছে এমন কোনো প্রকাশ্য রিপোর্ট এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ফলে ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচেষ্টা এবং ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করতে আলাদা চুক্তির উদ্যোগ আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।

আঞ্চলিক কর্মকর্তা বলেন, লঞ্চার সরবরাহে দেরির “কয়েকটি কারণের” মধ্যে একটি হচ্ছে ওমানের মধ্যস্থতায় চলা যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চলা পারমাণবিক আলোচনা। আলোচনায় কিছু প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলেও গত শুক্রবার ইরান জানিয়েছে, তারা রবিবার ওমানে চতুর্থ দফার বৈঠকে অংশ নিতে সম্মত হয়েছে।

রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট-এর গবেষক জ্যাক ওয়াটলিং বলেন, ইরান পারমাণবিক আলোচনাকে রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্র সরবরাহের বিষয় থেকে আলাদা করেই দেখবে। এই লঞ্চার ব্যবহার করে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর চাপ বাড়াতে পারবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ-এর গবেষক ফ্যাবিয়ান হিনজ বলেন, “রাশিয়ান বাহিনী Fath-360 দিয়ে দ্রুত ও সহজে আঘাত হানতে পারবে। এটি অল্প সময়ে প্রস্তুত করে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে আঘাস হানতে সক্ষম।

বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার Fath-360 ব্যবহারের ফলে ইউক্রেনের সীমিত মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর চাপ অনেক বাড়বে। কারন ইস্কান্দারের মতো উন্নততর মিসাইল দিয়ে লক্ষ্য করে পাওয়ার গ্রিডসহ দূরপাল্লার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করে দিতে পারবে।

নেদারল্যান্ডস ডিফেন্স অ্যাকাডেমির সহযোগী অধ্যাপক রালফ সাভেলসবের্গ বলেন, Fath-360 এমনভাবে তৈরি যে এটি কম প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও চালাতে পারে। তিনি বলেন, “রাশিয়া কেন অপেক্ষাকৃত দুর্বল ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র কিনবে? এর কারন হিসেবে তিনি মনে করছেন, রাশিয়া হয়তো নিজেদের যথেষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন করতে পারছেনা।

এনএ/

দেখুন: এবার রাশিয়ায় ইউক্রেনের ভ’য়ং’ক’র হা/ম/লা, বিব্রত পুতিন!

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন