ইচ্ছা ছিল বড় হয়ে তিনি হবেন আর্মি অফিসার। পূরণ করবে বাবা-মার স্বপ্ন। তবে ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে নিঃশেষ পুরো পরিবারে স্বপ্ন। রিকশার রড ধরে ঝুলে থাকা নিহত একাদশের শিক্ষার্থী নাফিজের ছবি হয়ে ওঠে প্রেরণা।
প্রথমে নাফিজের বুকে গুলি করে ক্ষতবিক্ষত দেহটি ড্রেনে ফেলে দেয় হায়েনারা। আহত নাফিজকে পুলিশ যখন রিকশার পাদানিতে তুলে দেয়, তখনো সে রিকশার রডটি হাত দিয়ে ধরে রেখেছিল।
রিকশাচালক তাকে নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেটের একটি হাসপাতালে ঢুকতে চায়। আওয়ামী লীগের কয়েক নেতার বাধার মুখে চলে যান অন্যত্র। রিকশার রড ধরে থাকা ছবিটা মূহুর্তেই ভাইরাল হয় দেশজুড়। হয়ে উঠে প্রতিবাদের ভাষা।
রাজধানীর বিভিন্ন থানায় আর মর্গে নাফিজকে খোঁজাখুজি করে পরিবার। ৫ আগস্ট তার মরদেহ মেলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে।
আন্দোলনের শুরু থেকেই নাফিজ ছিল সক্রিয়। ৪ আগস্ট, বাবার কাছ থেকে ৩০ টাকা নিয়ে হাঁটতে যাওয়ার কথা বলে বের হন বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেনীর এই ছাত্র।
টিয়ারশেল-রাবার বুলেটের আঘাতেও দমে যায়নি সে। পরিবারও জানতো আন্দোলনে যাওয়ার কথা। তবে এটাই যে শেষ যাওয়া হবে তা জানা ছিল না, মা নাজমা আক্তারের। আর তাই বিষাদের কালো মেঘে ঢেকে আছে গোটা পরিবারজুড়ে ।
নাফিজের মস্তিষ্কে বাংলাদেশ ছাড়া কিছুই ছিলো না। মেধাবীরা দেশ চালাতে না পারলে বদলাবে না বাংলাদেশ, এই ছিলো মাধ্যমিকে জিপিএ পাঁচ পাওয়া নাফিজের চিন্তায়।
স্বজনদের দাবি, আন্দোলনে নিহত সকল সদস্যকে শহীদের মর্যাদা দিয়ে হত্যাকারীদের সঠিক বিচার করা হোক । সেই সাথে আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয় এমন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার দাবি তাদের ।