১৩/০৫/২০২৫, ৪:০৬ পূর্বাহ্ণ
28.7 C
Dhaka
১৩/০৫/২০২৫, ৪:০৬ পূর্বাহ্ণ

ক্রিমিয়ায় রুশ নিয়ন্ত্রণের স্বীকৃতি দিতে ‘প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র’

চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে নতুন এক উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রস্তাবিত এক চুক্তির কাঠামোয় বলা হয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রে যে যে এলাকা বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ করছে, তা ধরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে। সেই সঙ্গে ক্রিমিয়া উপদ্বীপে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুতি নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন জানায়, বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা শুক্রবার এ তথ্য জানান।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় রাশিয়া। এরপর থেকে এলাকাটি রাশিয়ার সরাসরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে এবং পরে আরও চারটি অঞ্চল—দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া—আংশিকভাবে দখল করে নেয়। তবে ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা এখনো পর্যন্ত এসব ভূখণ্ডকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।

সিএনএনের বরাতে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইউরোপীয় ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তারা এই প্রস্তাবের কাঠামো শেয়ার করেন। প্রস্তাবনায় যুদ্ধক্ষেত্রের বর্তমান সীমারেখা ধরে যুদ্ধবিরতির ব্যবস্থা, রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকা স্বীকৃতির সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ আলোচনার রূপরেখা উল্লেখ করা হয়েছে।

মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি বাস্তবসম্মত কাঠামো প্রয়োজন, যেখানে উভয়পক্ষের বর্তমান অবস্থান বিবেচনায় নেওয়া হবে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের মধ্যে এ নিয়ে ফোনে কথোপকথনও হয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে ইউক্রেন সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, কিয়েভ সরকার রাশিয়ার দখলে থাকা ভূখণ্ডকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবে রাজি হবে না। কারণ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এর আগেও স্পষ্টভাবে বলেছেন, “দখল করা কোনো ভূখণ্ডকে আমরা রাশিয়ার অংশ হিসেবে মেনে নিতে পারি না। এটি আমাদের জন্য লাল রেখা।”

জেলেনস্কির মতে, এসব ভূখণ্ড সংক্রান্ত আলোচনা সবচেয়ে সংবেদনশীল এবং কঠিন ইস্যু। এটি শান্তি আলোচনায় বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজ সূত্র বলছে, রাশিয়ার অনমনীয় মনোভাবের কারণে শান্তি প্রচেষ্টা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে, এবং এতে হতাশাও বাড়ছে। মার্কো রুবিও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি দ্রুত অগ্রগতি না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র কয়েক দিনের মধ্যেই এই উদ্যোগ থেকে সরে আসতে পারে।”

তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আশাবাদী। তিনি বলেন, “নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই, তবে আমরা দ্রুতই সমাধানে পৌঁছাতে চাই।” তিনি বারবার দাবি করে আসছেন, “আমি একদিনেই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারব।”

এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে এটি হতে পারে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের দিকে বড় ধরনের পদক্ষেপ—যদিও ইউক্রেনের সম্মতি এখনও বড় প্রশ্ন হিসেবে রয়ে গেছে।

পড়ুন: সোনারগাঁও লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের ৫০ বছরপূর্তি ও বর্ষবরণ উপলক্ষে বৈশাখী মেলা শুরু

দেখুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কে জিতবে?

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন