25.1 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৭, ২০২৫

রমজানের শুরুতেই বাজারে চলছে হযবরল অবস্থা

রমজান মাস শুরুর আগে নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে ছিল। কিন্তু রোজার প্রথমদিনেই সব পণ্যেরই দাম মানুষের নাগালের বাইরে। বিশেষ করে রোজার পণ্যের দাম হুট করেই দেড় থেকে দুই গুণ বেড়ে গেছে। সবচেয়ে বেড়েছে বেগুনের দাম। নাগালের বাইরে লেবু-শসা, মাল্টা, ডাবের দামও। খেজুর কেজি প্রতি বেড়েছে একশ থেকে দেড়শ টাকা। আর সয়াবিন তেল তো খোঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। সবমিলিয়ে বাজারে চলছে হযবরল অবস্থা।

রোজার প্রথমদিনেই বেগুনের সেঞ্চুরি

শনিবার ৬০ টাকা কেজিতে বেগুন বিক্রি হলেও আজ রমজানের প্রথমদিন বেগুনের দাম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। মূলত আজকের বাজারে লম্বা বেগুনের চাহিদা সবচেয়ে বেশি, আর এ বেগুন বাজারে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মানভেদে অন্যান্য বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যেই বিক্রি হতে দেখা গেছে বাজারে। রোববার (২ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে বেগুনের দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।

রমজানের শুরুতেই মাল্টা ও ডাবের দাম ঊর্ধ্বমুখী

পবিত্র রমজানে ইফতারের টেবিলে অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ ফল। বিশেষ করে মাল্টা, কমলা, আপেল কিংবা দেশীয় ফলের প্রতি বাড়তি নজর থাকে অনেকের। যদিও নিম্নবিত্ত, স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে ফল বরাবরই নাগালের বাইরে। তার ওপর শুরু হয়েছে রমজান। সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ীরা এরই মধ্যে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ফল।
ক্রেতাদের অভিযোগ, রোজা এলেই দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা চলে। সব ফল বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ফলের দাম বরাবরই একটু বেশি। তবে বিদেশি ফলের ওপর শুল্ক-কর আরোপে দাম আরও বেড়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাল্টা, কমলা ও আপেলের দাম কেজি প্রতি ২০-৪০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজধানীর অধিকাংশ বাজারে প্রতি কেজি মাল্টা ৩০০-৩২০ টাকা, কমলা ২৭০-২৮০ টাকা, চায়না (মোটা) কমলা ৩০০-৩২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ফুজি জাতের আপেল বিক্রি হচ্ছে ৩১০-৩২০ টাকা কেজি দরে এবং গ্রিন ও গালা আপেল ৪২০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নাগালের বাইরে লেবু-শসার দাম

সারাদিন সিয়াম সাধনার পর ইফতারে এক গ্লাস ঠান্ডা লেবুর শরবতে তৃষ্ণা মেটায় ধর্মপ্রাণ মানুষ। একইসঙ্গে পরবর্তী অন্যান্য খাবারের সঙ্গে পানি সমৃদ্ধ সবজি শসার জুড়ি নেই। তাই সারাবছর যেমনই চাহিদা থাকুক না কেন, রমজান মাসজুড়ে লেবু, শসা ও খিরার চাহিদা ভোক্তা পর্যায়ে কয়েকগুণ বাড়ে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা এই তিনটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। প্রতিবারের মতো এবারও একই অবস্থা হয়েছে। রোজার ঠিক আগ মুহূর্তেই লেবু, শসা ও খিরার দাম বেড়েছে ৪০-৬০ টাকা পর্যন্ত। তবে বাজারগুলোতে এসব পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লেবুর হালি (৪টি) সর্বনিম্ন দাম শুরু হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায় (ছোট আকৃতির লেবু)। এরপর মাঝারি ধরনের লেবুর হালির দাম চাওয়া হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। আর বড় আকৃতির লম্বা লেবুর হালির দাম ৯০-১১০ টাকা পর্যন্ত চাওয়া হচ্ছে। এছাড়া গোল আকৃতির বড় লেবুগুলো হালির দাম ১০০-১৩০ টাকা পর্যন্ত হাঁকা হচ্ছে।

আর দেশি শসার আকৃতি ও মানভেদে ৭০-৮০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০-৮০ টাকা এবং খিরা ৬০-৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে।

অথচ গত সপ্তাহেও বড় লেবু সর্বোচ্চ ৪০-৬০ টাকায় ক্রেতারা খুচরা বাজার থেকে কিনতে পেরেছেন। একইসঙ্গে কেজিপ্রতি শসা ও ক্ষিরাও মিলেছে মাত্র ৩০-৬০ টাকায়।


খেজুর কেজিতে বেড়েছে দেড়শ টাকা

রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে শুল্ককর কমানোসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নেয় সরকার। ফলে আমদানি খরচ কমায় রোজার আগে ভোক্তা পর্যায়ে এবার খেজুরের দাম বাড়েনি, বরং কিছুটা কমেছিল। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি দেখা গিয়েছিল।

কিন্তু রোজার শুরুতে পাল্টে গেছে বাজারের চিত্র। খেজুরের দাম এবার কমেছে– এমন প্রচারণার মধ্যেই গত দুই দিনে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। শুল্কছাড় সুবিধা আর পর্যাপ্ত সরবরাহের মধ্যেও দাম বাড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা দায় চাপালেন সিন্ডিকেটের ওপর।

রোববার (২ মার্চ) সকালে রাজধানীর বাড্ডা-রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে।

পড়ুন : রোজার বাজারের ব্যাগে সয়াবিন তেলের বদলে পাম তেল!

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন