টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন আগামী রোববার (১২ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে। এক মাসব্যাপী এ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত প্রায় ৫ কোটি শিশু-কিশোরকে এই টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ সহকারী এ কথা জানান।
কার্যকর ও নিরাপদ হওয়ায় নির্দ্বিধায় সবাইকে টিকা নেওয়া আহ্বান জানান বিশেষ সহকারী।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৪৬ বছর ধরে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) চলছে। বিভিন্ন সংক্রামক রোগজনিত মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে সারাদেশে টিকাদান কর্মসূচি সফলভাবে চলছে। টিকাদান কর্মসূচির ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশ একটি ভালো উদাহরণ হিসেবে সব সময় পরিগণিত হয়। টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশ সর্বশেষ সংযোজন করতে যাচ্ছে টাইফয়েডের বিরুদ্ধে একটি টিকা (টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন)। টাইফয়েডের বিরুদ্ধে বেশ কিছু টিকা আছে। এই টিকা সবচেয়ে বেশি কার্যকর ও নিরাপদ।
আগামী ১২ অক্টোবর থেকে সারাদেশে প্রায় ৫ কোটি শিশু-কিশোরের মধ্যে এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হচ্ছে। আগামী একমাস ধরে এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে।
এই টিকা ৯ মাস বয়স থেকে ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত সব শিশু-কিশোরকে দেওয়া হবে জানিয়ে বিশেষ সহকারী বলেন, নবম শ্রেণি পর্যন্ত যারা থাকবে তাদের এই টিকা দেওয়া হবে। বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যাচাই করা (প্রি-কোয়ালিফাইড) টিকা। বাংলাদেশ সরকার কখনোই নিরাপত্তার বিষয় নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সাধারণত কর্মসূচিতে কোনো ভ্যাকসিন অন্তর্ভুক্ত করে না। অতএব আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে এ টিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এটার মান সম্পর্কিত বিষয় নিশ্চিত করা হয়েছে। এরপর এটা আমাদের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
যে কারণে এ ক্যাম্পেইন
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, চার বছর আগের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের যে শিশু মৃত্যু তার দুই-তৃতীয়াংশ টাইফয়েডের কারণে হয়েছে। আমরা আশা করি যদি টাইফয়েড প্রতিরোধ করা যায়, এটা শুধু শিশু মৃত্যু রোধই করবে না সামগ্রিকভাবে সব জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিশাল পরিমাণ টাইফয়েডজনিত রোগের যে বোঝা সেটি কমাবে।
তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে টাইফয়েড রোগের চিকিৎসায় সাধারণত অনেকগুলো অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়; যেগুলো পর্যায়ক্রমে তার কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এই টিকার মাধ্যমে যদি টাইফয়েড রোগীর সংখ্যা কমে, ফলে এর প্রতিরোধে জীবাণুর উদ্ভব অনেক বেশি ধীর হবে। অ্যান্টিবায়োটিকগুলো তাদের কার্যকারিতা সংরক্ষণ করতে পারবে। অন্যান্য রোগেও ব্যবহারের উপযোগিতা থাকবে তখন।
সায়েদুর রহমান বলেন, এই টিকা ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে টাইফয়েড মুক্ত করা, টাইফয়েড রোগের বোঝা কমানো এবং অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কমানো, সব মিলিয়ে মানুষের উৎপাদন সক্ষমতা সু-স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এ টিকা মাইল ফলক হবে।
পড়ুন : বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের শীর্ষ ৪ নম্বরে ঢাকা


