শিক্ষকের প্রতি ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন শেরপুরের প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ ঝগড়ারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
প্রিয় শিক্ষকের বিদায় বেলায় শত শত শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন বিদ্যালয়টির সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান বাবুল (বিএসসি)। অশ্রুসিক্ত নয়নে ফুল দিয়ে বরণ করে শেষ বিদায় জানানো হয় তাকে। একজন শিক্ষকের প্রতি শিক্ষার্থীদের এমন শ্রদ্ধা-ভালোবাসা অনুকরণীয় থাকবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
সোমবার (৯ জুন) দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে সম্মাননা জানানোর পাশাপাশি ফুলেল শোভায় বিদায়ী সংবর্ধনার আয়োজন করে।

কর্মজীবন শেষে নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক চাকরিজীবীকে নিদিষ্ট একটা সময়ে অবসর নিতে হয়। কর্মগুণে সেই বিদায় যেমনি স্মৃতি হয়ে থাকে, তেমনি ভালোবাসায় মুগ্ধতা ছড়ায়। এভাবেই প্রিয় শিক্ষককে রাজকীয় বিদায় জানালেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। প্রথমে প্রিয় শিক্ষকসহ তার পরিবারের সদস্যদের বাড়ি থেকে গাড়িতে তুলে মোটরসাইকেলের বহরে নিয়ে আসা হয় স্কুল প্রাঙ্গণে। পরে ফুল দিয়ে বরণ করে মঞ্চে উঠিয়ে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দেয়া হয় নানা উপহার সামগ্রী। এ সময় চারপাশে পরিবেশ যেন ভারি হয়ে উঠে। আলোচনা সভায় শিক্ষাগুরুর ভালোবাসার স্মৃতিচারণ করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মাহফুজুল হক বলেন, স্যারের শূন্যতা কখনই পূরণ হবার নয়। বাবুল স্যার অনেক ভালো শিক্ষক ছিলেন। তার মত এমন একজন শিক্ষক আমাদের প্রাঙ্গণে আর দেখা যাবেনা এটা ভাবতেই পারছিনা।
৩৭ বছরের কর্মজীবনে শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের ভালোবাসার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন মনিরুজ্জামান বাবুল। এসময় তিনি বলেন, আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি তাদের (শিক্ষার্থীদের) কিছুই দিতে পারিনি। কিন্তু তারা আমাকে এভাবে সম্মান করবে তা কখনও ভাবিনি। এটা আমার জন্য গর্বের ও আনন্দের।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআন তিলাওয়াত করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী আরাফাত হোসাইন এবং গিয়া পাঠ করেন শ্রী অনিক মোদক। পরে বিদায়ী শিক্ষকের উদ্দেশ্যে মানপত্র পাঠ করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী মাসুদ রানা। পরে প্রতিষ্ঠানটি সাবেক শিক্ষক, বর্তমান শিক্ষক, সাবেক শিক্ষার্থী এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা বক্তব্য প্রদান করেন।