25 C
Dhaka
সোমবার, মে ১২, ২০২৫

শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে তিনদিনব্যাপী জাতীয় আয়োজনের উদ্বোধন

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে বিশ^কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তিনদিনব্যাপী জাতীয় আয়োজনের উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন,জমিদারি সূত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে আসতেন। সেখানকার মানুষের সাথে তার আলাদা একটি দেয়া-দেয়া সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। সেটা ছিল জাগতিক ও ইন্টেলেকচুয়াল। রবীন্দ্রনাথের অনেক চিঠিপত্রে তিনি বলেছেন বাংলাদেশের প্রকৃতির টানের পাশাপাশি এদেশের একদল ভাবুক মানুষের সাথে তার যোগাযোগ ছিল। বিশেষ করে গগন হরকরা।


মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন,আমাদের দেশের নিজস্ব সংস্কৃতির প্রাথমিক অভিব্যক্তি হলো গান। আমাদের দেশের মানুষ যখন আনন্দ পাই,দুঃখ পাই কিংবা অনুভূতি জানাতে চাই যখন তাদের প্রাথমিক অভিব্যক্তি হয় গান। আমি এইগুলোকে শুধু গান হিসেবে না দেখে কবিতা ও দর্শন হিসেবে দেখতে বলবো। তাহলেই আমরা বুঝতে পারবো আমাদের এ অঞ্চলের দর্শন ও ভাবের গভিরতা কতটুকু ছিল।


তিনি বলেন, আমার চোখে আপনাদের অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দার্শনিক ও গানের মানুষ হলো লালন ও সিরাজ। আমরা যেমন রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করছি,নজরুল জয়ন্তী পালন করছি তেমনি আমাদের হীনমন্যতা থেকে বেড়িয়ে এসে নতুন বাংলাদেশে লালন ফকির ও হাসন রাজার অনুষ্ঠান জাতীয়ভাবে পালন করা উচিৎ বলে আমি মনে করি।


সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: ফরহাদ সিদ্দিক, ভাষা বিজ্ঞানী অধ্যাপক মনসুর মুসা, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান বক্তব্য রাখেন। আলোচনা শেষে মূল মঞ্চে রবীন্দ্র সংঙ্গীত,কবিতা আবৃত্তি, দলীয় নৃত্য ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক পরিবেশন করবেন কুষ্টিয়া জেলা ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ের রবীন্দ্র শিল্পীরা। এর আগে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের কন্ঠে জাতীয় ও রবীন্দ্র সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সুচনা করা হয়।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এবারের আয়োজনে কুঠিবাড়ির মুল মঞ্চে প্রতিদিনই আলোচনা সভার পাশাপাশি রবীন্দ্র সংঙ্গীত, কবিতা আবৃত্তি,দলীয় নৃত্য ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক পরিবেশন করা হবে। সাথে কুঠিবাড়ী চত্ত্বরে বসেছে বিশাল গ্রামীণ মেলা। নানা রকম পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা।

এদিকে তিনদিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি আঙিনা হাজারো দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখর হয়ে উঠেছে। দর্শনাথীদের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টির পাশাপাশি কুঠিবাড়িকে পুর্ণাঙ্গ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি এই অঞ্চলের মানুষের।
জমিদারী দেখাশোনার জন্য ১৮৯১ সালে প্রথম এই কুঠিবাড়িতে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নিরিবিলি পরিবেশ, জমিদারী আর ব্যবসার কারনে বার বার কুষ্টিয়ার এই কুঠিবাড়িতে ফিরে আসতেন তিনি। নিভূত বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চল কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কবীর জীবনের বেশকিছু মূল্যবান সময় কেটেছে। এখানে বসে রচিত গীতাঞ্জলী কাব্যই রবীন্দ্রনাথকে এনে দিয়েছে নোবেল পুরষ্কার আর বিশ্বকবির মর্যাদা। এছাড়াও তিনি এখানে বসেই আমাদের জাতীয় সঙ্গীতসহ অসংখ্য কালজয়ী সাহিত্য রচনা করেছেন। কুঠিবাড়িতে সংরক্ষণ আছে সেসব দিনের নানা স্মৃতি।

পড়ুন:শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে চলছে শেষ মুহূর্তর প্রস্তুতি

দেখুন: শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি 

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন