মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্কনীতিতে গোটা বিশ্বে তৈরি হওয়া অস্থিরতা কিছুটা কমলো মোবাইল ও কম্পিউটারে ছাড়ের খবরে। মার্কিন শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা দপ্তরইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার পেট্রোল এক নোটিশে জানিয়েছে, মোবাইল, কম্পিউটারসহ কিছু ইলেকট্রনিক পণ্যকে শুল্কের আওতা থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসে।
চীনের ওপর আরোপিত ১২৫ শতাংশ কারণে মোবাইল ও কম্পিউটারের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। কারণ, মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপলের ৮০ শতাংশের বেশি পণ্য চীনে তৈরি হয়। ফলে নতুন শুল্কনীতিতে মোবাইল ও কম্পিউটার বাদ পড়ায় প্রযুক্তি খাতে স্বস্তি ফিরেছে।

স্মার্টফোন, কম্পিউটার ছাড়াও মেমোরি কার্ড, সেমিকন্ডাক্টর, সোলার সেল এবং টিভি ডিসপ্লের মতো বৈদ্যুতিক পণ্যকেও নতুন শুল্কনীতি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এসব পণ্যের স্থানীয় উৎপাদন সীমিত হওয়ায় আমদানিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসন শুরু থেকেই অ্যাপলসহ মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরের ওপর জোর দিয়ে আসছিল। হোয়াইট হাউসের প্রেসসচিব জানিয়েছেন, অ্যাপল ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। ফলে এই ছাড়কে প্রাথমিকভাবে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ট্রাম্প শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা অনেক অর্থ নিচ্ছি, দেশ হিসেবে লাভবান হচ্ছি।” তিনি জানান, আগামী সপ্তাহে ছাড় নিয়ে বিস্তারিত ঘোষণা দেওয়া হবে।
বিশ্লেষকরা এই সিদ্ধান্তকে ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হিসেবে দেখছেন। ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের গবেষক ড্যান আইভস এক্স পোস্টে বলেন, “স্মার্টফোন ও চিপের ক্ষেত্রে ছাড় প্রযুক্তি খাতের জন্য গেম-চেঞ্জার।”
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্য অনুসারে, মার্কিন বাজারে বিক্রি হওয়া অ্যাপলের ৮০ শতাংশ আইফোন চীনে তৈরি, বাকি ২০ শতাংশ ভারতে। যদিও অ্যাপল এখন সরবরাহ চেইন বৈচিত্র্যে জোর দিচ্ছে। ভারত ও ভিয়েতনাম নতুন উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে।
নতুন সিদ্ধান্ত ৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে। এতে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো আপাতত স্বস্তিতে থাকলেও, ভবিষ্যৎ শুল্কনীতিতে আরও পরিবর্তনের আভাস মিলছে।
পড়ুন: বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭% আরোপ করলো যুক্তরাষ্ট্র
দেখুন: এবার মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ আরোপ করল চীন
ইম/