নানা আতঙ্ক আর গুজব থেকে বের হতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি শেয়ারবাজারেও যখন সরকার নজর দিলো তখনই বিনিয়োগকারীদের ভীতিকর অবস্থা তৈরি হলো। দীর্ঘদিন ধরে যারা সাবেক সরকারের ছত্রছায়ায় শেয়ার ব্যবসায় মনোযোগী ছিলেন তারা অতিরিক্ত শেয়ার বিক্রি করে টাকা বের করে নিচ্ছে।
অন্যদিকে গতকাল মঙ্গলবার (২০ আগষ্ট) বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত-উল-ইসলামসহ শীর্ষ ৮ জন শেয়ার ব্যবসায়ীর ব্যাংক হিসাব ১ মাসের জন্য জব্দ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, আতঙ্কের মাত্রা আরও বেড়েছে। যার ফলশ্রুতিতে আজ বুধবার (২১ আগষ্ট) শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন হয়েছে।
তবে বর্তমান শেয়ারবাজার পরিস্থিতি উন্নতি করতে আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করে। বৈঠকে পুঁজিবাজার উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সংস্কারের ক্ষেত্রে বিএসইসি সব ধরণের প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
এদিকে পুঁজিবাজারের পতন যত গভীর হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা তত ভারী হচ্ছে। আজ দিনশেষে ডিএসই’র ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১.৯০ শতাংশ বা ১০৮.৪০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬০৬.৯৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২৮.২৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২০১.৪১ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৪৫.৬৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ৪৭.৬৩ পয়েন্টে।
দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৪ টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১ টির, কমেছে ৩৭১ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১২ টির। অর্থাৎ পুঁজিবাজারে আজ মাত্র ২.৭৯ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। সারাদিনে ডিএসইতে ১৭ কোটি ৮৫ লাখ ২৯ হাজার ২০৪টি শেয়ার ৮৬ হাজার ৬৮ বার হাতবদল হয়েছে। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৫৩৬ কোটি ৮৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
গত কার্যদিবসে অর্থাৎ মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ডিএসই’র ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১.০৪ শতাংশ বা ৬০.১৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ৫ হাজার ৭১৫.৩৫ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৬.৪৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ১ হাজার ২২৯.৬৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ২৭.৮৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ২ হাজার ৯৩.২৬ পয়েন্টে।
দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৭ টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছিল ৬৪ টির, কমেছিল ৩০১ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছিল ৩২ টির। অর্থাৎ পুঁজিবাজারে গত কার্যদিবসে ১৬.১২ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়েছিল। সারাদিনে ডিএসইতে ১৫ কোটি ৩৬ লাখ ১৫ হাজার ২৮৪টি শেয়ার ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭০৯ বার হাতবদল হয়েছিল। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছিল ৫১৮ কোটি ৬১ লাখ ৬ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ লেনদেন বেড়েছে ১৮ কোটি ২২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।