13.5 C
Dhaka
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫

শেরপুরে বন্যার অবনতি, প্রাণহানি বেড়ে ৭, উদ্ধারে সেনাবাহিনী

শেরপুরে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে বিভিন্ন নদীর পানি। বিভিন্ন এলাকায় পানি বাড়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া বন্যায় এ পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অনেকেই নিখোঁজ রয়েছে।

এখন পর্যন্ত শেরপুরের ৫টি উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আর পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ। জেলার বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। একইসঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর আসছে।

শেরপুরের পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসনসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিজিবি। এছাড়া সেনাবাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধারকাজে যুক্ত হয়েছেন।

নতুন করে শেরপুর সদর এবং নকলা উপজেলার আরও ৬টি ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। নতুন নতুন আরও এলাকার প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় শেরপুরের মহারশি, সোমেশ্বরী, চেল্লাখালি, ভোগাই ও মৃগী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নকলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, শনিবার রাতে নকলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বন্যায় নালিতাবাড়ী উপজেলায় পাঁচজন ও ঝিনাইগাতীতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

শুধু ঝিনাইগাতী এবং নালিতাবাড়ী উপজেলায় ২ হাজার ৫৭টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিক হিসাবে ১১ কোটি টাকার বেশি। জেলার অন্তত ৩০ হাজার হেক্টর আমন আবাদ এবং এক হাজার হেক্টর সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে অন্তত ৭০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শেরপুরের যেসব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা হয়েছে সে স্কুলগুলোকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।নালিতাবাড়ীতে আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ১২৩টি। এর মধ্যে ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

নালিতাবাড়ী উপজেলায় উদ্ধার এবং ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে সেনাবাহিনী। ৬টি স্পিডবোটের মাধ্যমে ৬০ জন সেনাসদস্য উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

ঝিনাইগাতী উপজেলার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নালিতাবাড়ী উপজেলায় ১২টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি ইউনিয়নে বেশি ক্ষতি হয়েছে।

নেত্রকোণা
টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের কমপক্ষে ১৫টি গ্রামের ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এখানকার জারিয়া জাঞ্জাইল এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ২৫০ মিলিমিটার এবং দুর্গাপুরে ১৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড

স্থানীয় প্রধান নদ-নদী সোমেশ্বরী ও কংসের পানি বিপদসীমার নিচে থাকলেও ধীরগতিতে বাড়ছে। নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে পানি প্রবেশ করায় উপজেলার কুল্লাগড়া, গাঁওকান্দিয়া, চণ্ডিগড় ও কাকৈরগড়া ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।

ময়মনসিংহ
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলার অন্তত ৮০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। তলিয়ে গেছে বসতঘর, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ভেসে গেছে ঘেরের মাছ। ডুবে গেছে প্রায় চার হাজার হেক্টর জমির ফসল।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন