শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক পরিসরে এক নতুন ইতিহাসের সূচনা করলেন ৫৫ বছর বয়সী অনুড়া কুমারা দিসানায়েক। দ্বিতীয় দফা ভোট গণনা শেষেও তাকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়েছে কিছুক্ষণ আগে।
প্রাথমিক ভোট গণনায় তিনি প্রায় অর্ধেকের বেশি ভোট পেয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, যা তার দল, জনতা বিমুক্তি পেরেমুনা (জেভিপি)-র জন্য একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত।
দিসানায়েকের বিজয়ে নিশ্চিত হলো শ্রীলঙ্কার দীর্ঘদিনের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন। একসময় উগ্র মার্কসবাদী দল হিসেবে পরিচিত জেভিপি, যা অতীতে সহিংস বিদ্রোহের জন্য কুখ্যাত ছিল, এখন দিসানায়েকের নেতৃত্বে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে।
প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যায়, প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন, যেখানে দিসানায়েকের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাত্র ২০ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। বিরোধী দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা তাকে তার বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানাতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে,
শ্রীলঙ্কার নির্বাচন ব্যবস্থায় ভোটাররা তাদের পছন্দ অনুযায়ী তিনজন প্রার্থীকে র্যাঙ্ক করতে পারেন, তবে কোনো প্রার্থী যদি ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পায়, তবে দ্বিতীয় পর্যায়ে ভোটের পুনর্বন্টন ঘটে। তবে প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, দিসানায়েক সরাসরি ৫০ শতাংশ অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে প্রথমবারের মতো কোনো নির্বাচন সরাসরি দুই প্রধান দলের বাইরে একটি প্রকৃত বহুমুখী প্রতিযোগিতায় পরিণত হলো। প্রায় ৩০ জনেরও বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও, বেশিরভাগ ভোট তিনজন ফ্রন্ট-রানারের মধ্যে কেন্দ্রীভূত হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে জনতার ক্রোধ এবং রাজাপাকসে গোষ্ঠীর পতন শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। ২০২২ সালে ব্যাপক জনরোষের কারণে রাজাপাকসে পরিবারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করা হয়, এবং এরপর থেকে দিসানায়েকের মতো নেতারা শক্তি সংগ্রহ করেছেন। দিসানায়েকের প্রচারণা দুর্নীতি ও অর্থনৈতিক মন্দার বিরুদ্ধে ছিল, যা শ্রীলঙ্কার দরিদ্র ও হতাশ জনগণের মধ্যে প্রবল সমর্থন পেয়েছে।