দিন গড়িয়ে রাত হলো কিন্তু ঈদযাত্রার দুর্ভোগ যেন বেড়েই চলছে। বিশেষ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল থেকে থেমে থেমে চলছে যানবাহন। ফলে এ দুই মহাসড়কে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। মধ্যরাতেও দীর্ঘ হচ্ছে দুর্ভোগ আর ভোগান্তি।
ঢাকার উত্তরের প্রধান প্রবেশপথ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে পড়েছেন শত শত মানুষ। অনেকে আবার শত চেষ্টা করেও কোনো পরিবহনে উঠতে পারেননি। তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে আছেন একটাই আশায়, কোনোভাবে যেন বাড়ি ফেরা যায়।

উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গী, স্টেশন রোড, চেরাগ আলী, কলেজ গেট এবং গাজীপুরাসহ চৌরাস্তা পর্যন্ত পুরো এলাকায় গাড়ির দীর্ঘ সারি। কেউ কেউ বাসে উঠতে পেরে আটকে আছেন বাসেই, আবার অনেকে বাসেরও দেখা পাননি। যানজটের এমন অবস্থা যে, অনেক যাত্রী হেঁটে এগিয়ে যাচ্ছেন— আর পেছনে পড়ে আছে ধীরগতির বাস। এই পুরো এলাকাজুড়েই যাত্রীরা দাঁড়িয়ে আছেন রাস্তার পাশে। কেউ ছোট বাচ্চাকে কোলে নিয়ে, কেউ আবার স্যুটকেসের ওপর বসে আছেন, আবার কারও চোখে ছিল বিরক্তি। এরই মধ্যে দূরপাল্লার বাস না পেয়ে অনেকে এখন গাজীপুর সিটির ভেতর চলাচলকারী সিটিবাস, মিনিবাস এমনকি মালবাহী পিকআপেও যাত্রা করছেন। সেই সঙ্গে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগও রয়েছে।

অপরদিকে কোনাবাড়ি থেকে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত উত্তরবঙ্গগামী লেনে কয়েক কিলোমিটার তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় দুপুরের পর থেকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সন্ধ্যা ৭টার দিকেও যানজট অব্যাহত ছিল।
বিকেলে যাত্রী ও গণপরিবহনের চাপ বাড়তে থাকায় কোনাবাড়ি থেকে চন্দ্র পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়। চন্দ্র থেকে উত্তরবঙ্গের দিকে গণপরিবহন ঠিকমতো পার না হওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
গাজীপুরে ২ হাজার ১৭৬টি নিবন্ধিত বিভিন্ন ধরনের শিল্প কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১৫৪টি পোশাক কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় কাজ করেন কয়েক লাখ শ্রমিক। গতকাল কয়েক ধাপে কারখানা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ঈদের ছুটি ঘোষণা করায় ওই সব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বজনদের সাথে ঈদ করতে পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে গাজীপুর ছাড়ছেন।

রাজধানী ঢাকা ও গাজীপুর থেকে বের হওয়ার পথ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রায় যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। গতকাল অধিকাংশ কারখানায় ছুটি করে। আজ বৃহস্পতিবার বাকি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করায় মহাসড়কে যাত্রীদের চাপ গতকালের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়েছে। বিকেলে চন্দ্রায় যাত্রীদের ঢল নামে।
নাওজোড় হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকাতুল আলম বলেন, ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে হাইওয়ে পুলিশসহ র্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও যাত্রীদের নিরাপত্তায় ছিনতাই রোধে পুলিশের আলাদা টিম কাজ করছে।