সরকারি খরচে সুদূর রাশিয়া থেকে নিউক্লিয়ার সায়েন্সে বিশেষ ডিগ্রি নিয়েছেন তারা। শর্ত ছিল রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে চাকরি হবে। কিন্তু গেল সরকারের আমলে নিয়োগ অনিয়মে সে আশার গুড়ে বালি। এমন একটি স্পর্শকাতর প্রকল্পে নিয়োগ পাচ্ছে অদক্ষ প্রকৌশলীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরো প্রক্রিয়াটিই একধরণের প্রতারণা।
টাকার অঙ্কে দেশের সবচেয়ে বড় মেগাপ্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। নির্মাণ প্রায় শেষ। রুশ রাষ্ট্রীয় সংস্থা রোসাটমের কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহায়তায় এই প্রকল্প এখনও রাশিয়ানদের ওপর নির্ভরশীল।
দীর্ঘমেয়াদে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা যাতে বাংলাদেশিরা করতে পারে, সেজন্য সরকারি খরচে রাশিয়ায় বিশেষ উচ্চশিক্ষা নিতে কয়েক ব্যাচে পাঠানো হয় ৯০ শিক্ষার্থীকে। শর্ত ছিল দেশে ফিরে ছয় বছর বাধ্যতামূলক কাজ করতে হবে রূপপুরে।
কিন্তু কথা রাখেনি আওয়ামী লীগ সরকার। নিউক্লিয়ার সায়েন্সে বিদেশি ডিগ্রিধারী ৪৪ জন নিয়োগ পাননি। তাঁদের অভিযোগ, স্বজনপ্রীতিতে নিয়োগ পেয়েছে অদক্ষ কর্মী। নিরুপায় হয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠিও দিয়েছেন বঞ্চিত তরুণ পরমাণু বিজ্ঞানীরা।
প্রায় সাড়ে ছয় বছর রাশিয়ায় পড়াশোনা করে আসা এই তরুণদের অনেকেই এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। কিন্তু পারমাণবিক প্রকল্পে কাজ করার স্বপন পূরণ না হওয়ায় না মানায় হতাশ তারা।
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থার বিধি মেনেই চালানোর কথা রূপপুর প্রকল্পের। এমন স্পর্শকাতর প্রকল্পে অনভিজ্ঞদের নিয়োগের বিধান নেই। অনিয়মের আভাস পেয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে ক্ষমতাচ্যূত সরকারের মন্ত্রীকে এ বিষয়ে চিঠি দেয় রোসাটম। প্রশিক্ষিতদের নিয়োগের তাগিদ দেয়া হয় তাতে।
নিউক্লিয়ার সায়েন্সে উচ্চতর ডিগ্রি থাকা তরুণদের নিয়োগ না দেয়াকে বড় ধরনের প্রতারণা মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাও।
বিষয়টি নিয়ে জানতে পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও, এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।