কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) তাদের চার দশকের সশস্ত্র বিদ্রোহের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে।
আজ সোমবার (১২ মে) সংগঠনটি আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের বিলুপ্তির ঘোষণা দেয়, যা ফিরাত নিউজ এজেন্সি প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে পিকেকে জানায়, তারা সব ধরনের সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করছে এবং তুর্কি-কুর্দি সম্পর্ককে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার সময় এসেছে। সংগঠনটি আরও জানায়, এখন থেকে কুর্দি রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও একটি গণতান্ত্রিক কুর্দি জাতি গঠনের দায়িত্ব গ্রহণ করবে।
তুরস্ক সরকার এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে, এই সিদ্ধান্তের ফলে তুরস্ক ও ইরাকের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে প্রায় ৪০ বছর ধরে চলা সংঘাতের অবসান ঘটবে, যেখানে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
পিকেকে প্রধান আবদুল্লাহ ওজালান, যিনি ১৯৯৯ সাল থেকে তুরস্কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সব সশস্ত্র গ্রুপকে ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার আহ্বানের ধারাবাহিকতায় সংগঠনটি বিলুপ্তির ঘোষণা দেয়।
১৯৮৪ সাল থেকে কুর্দিদের জন্য একটি স্বতন্ত্র মাতৃভূমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পিকেকে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছিল। তুরস্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র এই গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে সহিংসতার মাত্রা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুরস্ক সরকার কুর্দি-সমর্থিত রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় এবং অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করে কারাদণ্ড দেয়।
বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার কুর্দি-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতেও তুরস্ক-সমর্থিত বাহিনী হামলা চালায়। তবে, ওজালানের আহ্বানের পর এসব সংঘাত থামার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা তুরস্কের কুর্দি নেতারা স্বাগত জানিয়েছেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে কুর্দিরা তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস করত। বিশ্বযুদ্ধের পর তারা ইরাক, ইরান, সিরিয়া ও তুরস্কে ছড়িয়ে পড়ে, তবে তারা কখনো স্বতন্ত্র রাষ্ট্র পায়নি।
এনএ/