25 C
Dhaka
সোমবার, মে ১২, ২০২৫

ইয়েমেনে হামলা পরিকল্পনার মার্কিন গোপন গ্রুপে ঢুকে পড়লেন সাংবাদিক

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সিগন্যাল গ্রুপ চ্যাটে ভুলক্রমে একজন সাংবাদিককে অন্তর্ভুক্ত করেছে, যেখানে মার্কিন সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষত নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে, যারা বিষয়টিকে বড় ধরনের নিরাপত্তা লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন।

নিউজ রিপোর্ট অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি গোপন সিগন্যাল গ্রুপ চ্যাটে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে সামরিক হামলার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তবে এই গ্রুপ চ্যাটে এক সাংবাদিক, দ্য অ্যাটলান্টিক পত্রিকার জেফরি গোল্ডবার্গ ভুল করে যোগ দেন। গোল্ডবার্গ প্রথমে ভাবেন যে, এটি একটি ভুয়া গ্রুপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে সামরিক কর্মকর্তারা সিগন্যাল প্ল্যাটফর্মে আলোচনা করবেন না। তবে পরে তিনি বুঝতে পারেন যে এটি আসল এবং ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতেন।

এরপর গোল্ডবার্গ দ্রুত গ্রুপ থেকে বের হয়ে যান এবং হোয়াইট হাউস বা ট্রাম্প প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি, তবে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা দ্রুত বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করেছেন। বিশেষত, তারা বলছেন, এ ধরনের সেন্সিটিভ আলোচনা যদি এক সাংবাদিকের কাছে চলে যায়, তবে এটি খুবই বিপজ্জনক। জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য যদি শত্রুদের কাছে পৌঁছে যায়, তাহলে তা শুধু মানুষের জীবনকেই ঝুঁকিতে ফেলবে না, বরং দেশের নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতিতেও বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে।

এ ঘটনায়, মার্কিন সেনেটর এলিজাবেথ ওয়্যারেন এবং সাংবাদিক অন্যান্য ডেমোক্র্যাটরা বিষয়টি ‘ভয়ঙ্কর এবং বেআইনি’ বলে মন্তব্য করেছেন। তারা এও বলেছেন, এটি জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘন এবং এই ধরনের ঘটনা যেন আর না হয়, তা নিশ্চিত করা উচিত। হাউস আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সদস্য প্যাট রায়ান এই বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যানও এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং তারা বলেছেন, এই তথ্য অনিরাপদ প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা হয়নি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে এই ঘটনার সম্পর্কে কিছু জানতেন না বলে দাবি করেছেন। তবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট নিশ্চিত করেছেন যে, ট্রাম্প জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ এবং তার টিমের উপর পূর্ণ আস্থা রাখেন।

এছাড়া, সাংবাদিক ডেমোক্র্যাট দলের হাউস সদস্য হাকিম জেফরিস এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তদন্তের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি এবং তদন্তের মাধ্যমে এর দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের শাস্তি প্রদান করা উচিত।”

এদিকে, পিট হেগসেথ বলেছেন, যে কোনো সামরিক পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা চ্যাট গ্রুপে হয়নি এবং তিনি দাবি করেছেন, এই আলোচনা শুধুমাত্র সামরিক কর্মকাণ্ড নিয়ে না, বরং বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে সাধারণ আলোচনা ছিল।

কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে চ্যাট করা এবং একজন বহিরাগত ব্যক্তিকে সেখানে যুক্ত করা মূলত নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ করে। বিশেষ করে, এই ধরনের গোপন আলোচনা গুপ্তচরবৃত্তি আইন লঙ্ঘন হতে পারে এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার উপর এর প্রভাব পড়তে পারে।

এটি ইতিমধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে এবং এখনো কিছু কর্মকর্তাদের পদত্যাগও হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে গভীর প্রশ্ন উঠেছে, যা ভবিষ্যতে আরও বড় সংকটের কারণ হতে পারে।

পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলা, ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত

দেখুন: শাকিব খানের বাড়িতে মধ্যরাতে হামলা | 

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন