15 C
Dhaka
শুক্রবার, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪

সারদায় প্রশিক্ষণরত আরও ৫৮ এসআইকে অব্যাহতি

শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণরত আরও ৫৯ জন উপ-পরিদর্শককে (এসআই) অব্যাহতি দেয়া দেয়া হয়েছে।

প্রশিক্ষণ ক্লাসে ‘এলোমেলোভাবে বসে হইচই’ করে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণরত ৫৯ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিস (শোকজ) দেওয়া হয়েছিলো।

গত সোমবার ও বৃহস্পতিবার দুই দফায় তাদের নোটিস দেওয়ার কথা জানিয়েছেন সারদা পুলিশ একাডেমির উপমহাপরিদর্শক মো. গোলাম রউফ খান।

তিনি জানান, “শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাদের কারণ দর্শানে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে চিঠিও ইস্যু করা হয়েছে।”

পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিক) তারেক বিন রশিদ স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি চিঠিতে সোমবার ১০ জনকে এবং বৃহস্পতিবার ৪৯ জনকে ওই নোটিস দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: আড়াই শতাধিক এসআইকে অব্যাহতি

গত ২১ অক্টোবর সারদায় প্রশিক্ষণরত ২৫২ জন এসআইকে ‘সমাপনী কুচকাওয়াজের অনুশীলন প্যারেডে নাশতা নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির’ কারণ দেখিয়ে অব্যাহতি দেওয়ার পর একই ব্যাচের ৫৯ জনের বিষয়ে এই পদক্ষেপ নেওয়ার খবর এল।

পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ বিভাগের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা কামরুল আহসান বলেন, “এটা রুটিন বিষয়। শুনেছি শ্রেণিকক্ষে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাদেরকে শোকজ করা হয়েছে।”

‘প্রশিক্ষণ ক্লাসে এলোমেলোভাবে বসে হইচই করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি’র অভিযোগে দেওয়া শোকজ নোটিসে বলা হয়েছে, গত ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের ‘আইনের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ধারার’ ওপর ক্লাস ছিল। ওই ক্লাসে আইন প্রশিক্ষক ছিলেন পুলিশ পরিদর্শক মো. রেজাউল করিম, মো. নজরুল ইসলাম, মো. সিরাজুল ইসলাম ও শেখ শাহীন রাজা।

“তারা ক্লাসে গিয়ে দেখতে পান, অভিযুক্তরা শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে এলোমেলোভাবে বসে হইচই করে বিশৃঙ্খলা করছিলেন। রেজাউল করিমসহ সঙ্গীয় অন্যান্য পরিদর্শকেরা বারবার শৃঙ্খলার সঙ্গে বসার কথা বললেও নির্দেশ অমান্য ও কর্ণপাত না করে হইচই করতে থাকেন তারা।”

নোটিসে বলা হয়, পাঠদান চলাকালে ক্লাসে মনোযোগ না দিয়ে পাশাপাশি বসে কথাবার্তা বলা ‘বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির নিয়ম-শৃঙ্খলার পরিপন্থি’।

‘এহেন’ কার্যকলাপের প্রেক্ষিতে ১৯৪৩ সালের পিআরবি বিধি অনুযায়ী কেন অভিযুক্তদের চলমান মৌলিক প্রশিক্ষণ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না, তার লিখিত ব্যাখ্যা তিন দিনের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই ব্যাচে মোট ৮০৪ জন এসআই পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। ২৫২ জনের আগেও এ ব্যাচের তিনজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।

এই ব্যাচের ৮০৪ জনের মধ্যে জেলাওয়ারি হিসেবে গোপালগঞ্জ জেলা থেকে সবচেয়ে বেশি ৪৯ জন নিয়োগ পেয়েছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি শেখ হাসিনার সরকার পতনের আগ মুহূর্তে নিয়োগ করা ৮০৩ জন এসআই এবং ৬৭ জন এএসপির নিয়োগ অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানায়। তারা এই ব্যাচটিকেই বাদ দিতে বলেছিল কী না তা নির্দিষ্ট করে বলেনি।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, তাদের অব্যাহতির পেছনে ‘কোনো রাজনৈতিক কারণ নেই’।

ঠিক কী কারণে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হল জানতে চাইলে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, “শৃঙ্খলার সংজ্ঞা তো অনেক বড়। এটা তো একাডেমি বলতে পারবে। আমাদের সেনাবাহিনীতে দেখছি পাসিং আউটের আগেরদিনও অনেককে ফেরত পাঠানো হয়।”

এই এসআইরা ছাত্রজীবনে রাজনীতির যুক্ত থাকার কারণে এমন সিদ্ধান্তের শিকার হলেন কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “একাডেমি তাদের শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বের করে দিয়েছে। এর চেয়ে আরও বেশি সংখ্যায় বের করা হয়। পুরো ব্যাচ ধরে কখনো বের করে দেওয়া হয়। বিজিবিতে একবার পুরো ব্যাচ ধরে বের করে দেওয়া হয়। এরকম হতে পারে। ডিসিপ্লিন শব্দটাতো বিরাট বড়। এখানে কোনো রাজনৈতিক কারণ নেই।”

এর আগে গত রোববার সারদায় অনুষ্ঠেয় ৪০তম বিসিএসের পুলিশ ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ ‘অনিবার্য কারণে’ স্থগিত করা হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ অতিথিরা পাসিং আউট প্যারেডে অংশ নিতে সারদায় গেলেও অনুষ্ঠান আর হয়নি।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন