সুদানের দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষপীড়িত শরণার্থীদের আশ্রয়কেন্দ্রে বর্বর হামলা চালিয়েছে দেশটির আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। শুক্রবার ও শনিবার (১১ ও ১২ এপ্রিল) এই দুই দিনের হামলায় অন্তত ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২০ জন শিশু ও নয়জন মানবিক সহায়তাকর্মী রয়েছেন।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রবিবার (১৩ এপ্রিল) আল জাজিরা এ তথ্য জানায়। জাতিসংঘের সুদানবিষয়ক আবাসিক এবং মানবিক সমন্বয়কারী ক্লেমেন্টাইন নকওয়েটা-সালামি জানান, আরএসএফ এবং তাদের মিত্র মিলিশিয়া বাহিনী উত্তর দারফুর প্রদেশের এল-ফাশারের উপকণ্ঠে অবস্থিত জমজম ও আবু শৌক শিবিরে হামলা চালিয়েছে।
তিনি আরও জানান, হামলার সময় জমজম শিবিরে কার্যক্রম পরিচালনাকালে নয়জন সহায়তাকর্মী নিহত হন। জাতিসংঘের তথ্য মতে, জমজম ও আবু শৌক শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সংখ্যা সাত লাখের বেশি। এদের সবাই দারফুরে চলমান সহিংসতা ও সংঘাতের কারণে নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।
এ হামলার দায় আরএসএফের ওপর দিয়েছেন সুদানের ডক্টরস ইউনিয়ন। তারা জানিয়েছে, শুক্রবার জমজমের একটি হাসপাতালে হামলায় রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের অন্তত ছয়জন চিকিৎসাকর্মী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে হাসপাতালের চিকিৎসক মাহমুদ বাবাকার ইদ্রিস এবং এলাকার প্রধান আদম বাবাকার আবদুল্লাহ রয়েছেন।

প্রায় দুই বছর ধরে সুদানে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে লিপ্ত রয়েছে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস এবং সুদানি সশস্ত্র বাহিনী।
এই দ্বন্দ্বের কারণে দেশটিতে মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে। জাতিসংঘ বলছে, সুদানের এই সংঘাত বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বসবাস করছেন।
সম্প্রতি আরএসএফের আল-জাজিরাহ অঞ্চলের এক কমান্ডার সেনাবাহিনীর পক্ষে যোগ দেওয়ার পর হামলার মাত্রা আরও বেড়েছে। জাতিসংঘ এই নৃশংসতা অবিলম্বে বন্ধে আহ্বান জানিয়েছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
পড়ুন: সুদানে সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত
দেখুন: ভয়ংকর ‘জী*বাণু বো*মা’র হুমকি*র মুখে সুদান |
ইম/