39.2 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৮, ২০২৫

স্কুল ছাত্রীকে হয়রানির অভিযোগে হোটেল ব্যবসায়ী আটক

নীলফামারীর ডোমারে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে এক হোটেল ব্যবসায়ীকে আটক করেছিল পুলিশ। তবে পরবর্তীতে তাকে মুক্তি দেওয়ায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত শিপন ইসলাম (৪৫) ডোমার উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের জামিরবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় ডোমার ফার্মহাট বাজারের খাবার হোটেল ব্যবসায়ী।


সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার পর ডোমার ফার্মহাট এলাকায় এক অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে অভিযুক্ত শিপন ইসলামকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টার দিকে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়।


অভিযুক্ত শিপন ইসলাম জানান, ওই ছাত্রী তার দূর সম্পর্কের আত্মীয়। তিনি দাবি করেন, ছাত্রীটি তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করত এবং তিনি শুধু সাহায্য করার জন্য ফোনটি দিতেন। তবে ঘটনার দিন রাত ১১টায় তিনি ওই স্কুল ছাত্রীর বাড়িতে গিয়েছিলেন তার ফোনটি নেয়ার জন্য এবং স্থানীয়রা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসিয়েছে বলে তার দাবি।
প্রত্যক্ষদর্শী মিফতাহুল ইসলাম নামের এক যুবক জানান, তিনি ও তার বন্ধুরা একটি ওয়াজ মাহফিলে গিয়েছিলেন। ওয়াজ শেষে তারা বাজারে আসেন এবং শিপন ইসলামকে রাত ১১টার দিকে ছাত্রীর বাড়ির দিকে যেতে দেখেন। তার আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তারা তাকে অনুসরণ করেন। পরে ছাত্রীটি চিৎকার করলে স্থানীয়রা ছুটে এসে অভিযুক্তকে ধরে ফেলেন এবং পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।


অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া ওই মেয়ের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে আমাকে শিপন নামের ওই বয়স্ক লোকটি বিভিন্নভাবে বিরক্ত করতো। এসব বিষয় আমি ভয়ে পরিবারের কাউকে বলিনি। আমাদের বাড়িতে কেউ না থাকায় সে আমার সাথে খারাপ কাজ করতে চেয়েছিলো। পরে আমি চিৎকার দিলে লোকজন আমার বাড়িতে এসে ওকে ধরে নিয়ে যায়। আমি চাই তার বিচার হোক।
ওই ছাত্রীর বাবা-মা জানান, এ ঘটনায় তারা গভীর দুশ্চিন্তায় আছেন এবং মেয়েটির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা অভিযোগ করেন, শিপন ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন। তারা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
এলাকাবাসীর দাবি, শিপন ইসলামের বিরুদ্ধে আগেও খাবার হোটেল ব্যবসার আড়ালে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছিল। তারা তার হোটেল ব্যবসা বন্ধ এবং কঠোর শাস্তির দাবি জানান।


অভিযুক্তকে আটকের পর পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে গেলেও কিছু সময় পরেই তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, মাত্র ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসা করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।


এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রনেতা মো. শরিফ হোসেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘একটি শিশু হয়রানির শিকার হওয়ার পরও কেন অভিযুক্ত মাত্র ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে মুক্তি পেল? ডোমার থানার এমন কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা চাই, ঘটনার পুনঃতদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’


ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, ‘এলাকাবাসীর ফোন পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে শিপন ইসলামকে থানায় নিয়ে আসে। তবে ভুক্তভোগী পরিবার লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’


এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীর পরিবার এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এবং বিষয়টি পুনরায় তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।

পড়ুন: স্কুল ও ছাত্রাবাস ভবন দখলের অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে

দেখুন: পূর্নাঙ্গ মানুষ গড়ছে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল এন্ড কলেজ | 

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন