ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হামলায় ২ ও ৩ বছর বয়সী দুই জন শিশু নিহত হয়েছে এবং আরও দুই নারী আহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তি থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে।
এছাড়া গাজা ভূখণ্ডে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে আরও ৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর ফলে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৮ হাজার ৫২০ ছাড়িয়ে গেছে।
আজ শুক্রবার (১৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার পূর্ব গাজা সিটি এবং ভূখণ্ডের উত্তরে বেইত হানুনে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় দুই ফিলিস্তিনি শিশু নিহত এবং আরও দুই নারী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেইত হানুনে তাঁবুতে বোমা হামলায় ২ বছর বয়সী একটি শিশু নিহত এবং তার মা আহত হয়েছেন বলে চিকিৎসা সূত্র আনাদোলুকে জানিয়েছে।
এছাড়া গাজা শহরের পূর্বে শুজাইয়া পাড়ায় ইসরায়েলি ড্রোনের হামলায় ৩ বছর বয়সী এক শিশু নিহত হয়েছে বলে একটি চিকিৎসা সূত্র তুর্কি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে। সূত্রটি জানিয়েছে, উত্তর গাজার বেইত হানুনে ড্রোন হামলায় একজন নারীও আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলে আল-কাবিরা ও আল-ফারাহিন এলাকায় ইসরায়েলি ট্যাংক থেকে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। পূর্ব আবাসন এলাকাতেও ড্রোন হামলা হয়েছে, যদিও সেখানে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে, ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য ও উদ্ধারকর্মীরা গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে আরও সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে ৪৮ হাজার ৫২৪ জনে পৌঁছেছে।
শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় দুজন নিহত হয়েছেন এবং সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৪ জন। এতে করে ওই সময় থেকে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ৯৫৫ জন।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি থেকে তিন পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে, যার লক্ষ্য বন্দি বিনিময়, স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা ও গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার।
তবে, জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতি দাবির প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই সংঘাতে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েল ইতোমধ্যে গণহত্যার অভিযোগের মুখে রয়েছে।
এনএ/