যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ‘তামাশা’ আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেছেন, এটি ঘৃণা ও মূর্খতা শেখায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প এসব মন্তব্য করেন।
ট্রাম্প বলেন, “হার্ভার্ড একটি সম্মানজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে আর বিবেচিত হতে পারে না। একে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজগুলোর কোনো তালিকায় রাখা উচিত নয়।” তিনি আরও বলেন, “এটি বামপন্থীদের আখড়া। এখানে ঘৃণা এবং বোকামি শেখানো হয়। শিক্ষার জন্য এটি উপযুক্ত স্থান নয়।”
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের রাজনৈতিক তদারকি মানতে অস্বীকৃতি জানানোয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্ববিদ্যালয়টির ওপর কেন্দ্রীয় গবেষণা তহবিল বন্ধ করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি বলেন, কর-ছাড় সুবিধাও বাতিল করা উচিত। এর পরপরই ট্রাম্প প্রশাসন অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংস্থা (IRS)-কে এই কর সুবিধা বাতিলের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানায়।
সিএনএন ও ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ট্রাম্পের নির্দেশে হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দকৃত ২২০ কোটি ডলারের ফেডারেল তহবিল ইতোমধ্যে স্থগিত করা হয়েছে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই চাপে সাড়া না দিয়ে জানানো হয়েছে, তারা নিজেদের স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে কোনো আপস করতে রাজি নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার বলেন, “হার্ভার্ড কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ মেনে নেবে না। শিক্ষার স্বাধীনতা আমাদের মৌলিক নীতি।” তবে ট্রাম্প তার বক্তব্যে বলেন, “হার্ভার্ড সবসময় উগ্র বামপন্থী, বোকা এবং পাখির মস্তিষ্ক বিশিষ্ট লোকদের নিয়োগ দিয়েছে, যারা ছাত্রদের ব্যর্থতার শিক্ষা দেয়।”
হার্ভার্ড থেকে এখন পর্যন্ত ১৬২ জন নোবেল বিজয়ী হয়েছেন, তবুও ট্রাম্পের চোখে এটি শিক্ষার মর্যাদা হারিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিযোগ করেন, হার্ভার্ডে ‘বামপন্থী মাদকাসক্তরা’ শিক্ষকতা করেন, এবং এদের কারণেই প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার জন্য অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষাবিদদের একাংশ মনে করছেন, রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।
পড়ুন: হার্ভার্ডের ২.২ বিলিয়ন ডলারের অনুদান স্থগিত করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
দেখুন: দেশের প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানীদেরও হারিয়ে দিচ্ছে আল কাসাব!
ইম