চিকিৎসা বাবদ বাংলাদেশের কাছ থেকে প্রতি বছর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেয় ভারত। এবার সেই নির্ভরতাও কমবে। চীন বাংলাদেশে ৪টি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। আর এই খবরে নড়েচড়ে বসেছে ভারতের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে বরাবরই সাধারণ মানুষের একাংশের অভিযোগ অব্যবস্থাপনা, সীমাবদ্ধতা ও অনিয়ম নিয়ে। এখানে উন্নত চিকিৎসা পাওয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সম্ভব হয়না নানা ধরনের সীমাবদ্ধতার কারনে। ফলে বাধ্য হয়েই পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, থাইল্যান্ড কিংবা চীনের শরণাপন্ন হতে হয়। কেমন হবে যদি বাংলাদেশেই বিশ্বমানের উন্নত হাসপাতাল থাকে? তাহলে একদিকে স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশ যেমন স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে অন্যদিকে ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা অনেকটাই কমবে।
ঠিক এমনই একটি উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে এসেছে চীন। এবার বাংলাদেশে বিশ্বমানের উন্নত চিকিৎসা সেবা দিতে যৌথভাবে হাসপাতাল নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে দেশটি। গত বৃহস্পতিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।
প্রেস সচিব আরও বলেন, চীনে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে সেখানে চারটি ডেডিকেটেড হাসপাতাল নির্বাচন করা হয়েছে। চীন বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে হাসপাতাল নির্মাণ করতে চাচ্ছে। একই সঙ্গে চীনের বিভিন্ন কোম্পানি যাতে এ দেশে স্বাস্থ্যসেবা গড়ে তুলে সে বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে।
প্রেস সচিব জানান, অধ্যাপক ইউনূস চীনের বড় বড় হেলথকেয়ার কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং তাঁর এবারের সফরে প্রধান ফোকাস ছিলো বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে চীনা বিনিয়োগ আনা যায়।
তবে বাংলাদেশে হাসপাতাল নির্মাণ নিয়ে অনেক আগে থেকেই দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছিলো। এর আগে জানুয়ারিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের এক সৌজন্য সাক্ষাতে ঢাকায় একটি পূর্ণাঙ্গ বিশেষায়িত চীনা হাসপাতাল তৈরীর আলোচনা হয়। ঢাকার পূর্বাচলে এই বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের জন্য জমিসহ অন্যান্য সুবিধা দিতে প্রস্তুত হয় বাংলাদেশ।
এর আগে ২০২০ সালে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় ৫০ হাজার শয্যার হাসপাতাল করার প্রস্তাব দিয়েছিলো চীন। কিন্তু সেই প্রস্তাব হাসিনা সরকার খুব একটা আমলে নেয়নি।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে ঐতিহাসিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর চীন ও বাংলাদেশ তাদের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বুধবার বেইজিং-এ এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্ব এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান।
চীনের সাথে এই নতুন সম্পর্ক বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতকে আরো উন্নত ও স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলবে বলেই আশা করছেন সাধারণ মানুষ।
এনএ/