বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, “যারা এক সময় শেখ হাসিনার ভয়ে গর্তে লুকিয়ে ছিলেন, তারা এখন সংস্কারের কথা বলছেন।” মঙ্গলবার (১৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
আমীর খসরু বলেন, “আমরা ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি, তার আগে ২৭ দফা, তারও আগে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ‘ভিশন ২০৩০’ দিয়েছেন। কিন্তু যাঁরা এখন সংস্কারের কথা বলছেন, তাদের তখন রাজপথে দেখা যায়নি। এখন তাঁরা বড় বড় কথা বলছেন, অথচ আন্দোলন-সংগ্রামে তাদের চেহারা কোথাও দেখা যায়নি।”
সরকারকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “আচার-আচরণে মনে হচ্ছে, দেশ বুঝি বিনিয়োগের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। অথচ গত ১০ মাসে বিনিয়োগ কমেছে। বিনিয়োগের নামে ‘সার্কাস’ চলছে। তবে এখন মানুষ আগের মতো বোকা নেই।”
তিনি আরও বলেন, “যতদিন পর্যন্ত দেশে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত না হবে, ততদিন বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। বিনিয়োগকারীরা স্থিতিশীলতা চান, আর সেটি আসে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে।”
স্মরণসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে আমীর খসরু বলেন, “জাফরুল্লাহ চৌধুরী কোনো প্রচারের মধ্যে না গিয়েও স্বাস্থ্যখাতে মৌলিক কাজ করেছেন। তিনি ছিলেন ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের অন্যতম সাহসী কণ্ঠ। অথচ তাঁকে আজ কেউ স্মরণ করছে না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
অনুষ্ঠানে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “সরকারের সংস্কার কোথায়? পুলিশ-প্রশাসনে আগের লোকই রয়েছে। কোনো পরিবর্তন হয়নি।”
জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, “সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের খবর সরকার জানত না—এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।”
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “সরকার গঠনের ৯ মাস পার হলেও তারা কোন পথে যাচ্ছে, সেটি কেউ বুঝে উঠতে পারছে না।”
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার প্রমুখ।
পড়ুন: ‘মন খারাপ থাকলে হাসিনাকে গান শোনাতেন মমতাজ’
দেখুন: সুষ্ঠু ভোট আমাকে শেখাতে হবে না: শেখ হাসিনা
ইম/