দীর্ঘ ১৬ বছর পর মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহকে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদ জামাতের ইমাম হিসেবে পুনর্বহাল করা হয়েছে।
ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের ১৯৮তম জামাত উদযাপন উপলক্ষ্যে রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতিমূলক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান। ঈদ জামাত সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এবারও শোলাকিয়ায় পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এর জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি ছাড়াও সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে ‘শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল’ নামে ২টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করবে।
উল্লেখ্য যে, ২০০৪ সন থেকে ২০০৯ সন পর্যন্ত শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। ২০০৯ সনের ২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার চাপে তৎকালীন জেলা প্রশাসক তাকে সরিয়ে দেন। পাশাপাশি মোতাওয়াল্লীর অধিকারকেও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ওয়াকফ দলিলকে তোয়াক্কা না করে তৎকালীন জেলা প্রশাসক ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেন ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদকে। তখন এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করে ঈদজামাত নিয়ন্ত্রণ করে। মুফতি ছাইফু্ল্লাহর আগে তার পিতা মাওলানা আবুল খায়ের মোহাম্মদ নূরুল্লাহ টানা ৩০ বছর শোলাকিয়া ঈদগাহের অবৈতনিক ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রস্তুতিমূলক সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর রায়হান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. মোস্তারী কাদেরী, সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মো. রমজান আলী, পিপি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন, জিপি অ্যাডভোকেট জালাল মোহাম্মদ গাউস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়া ও আমিনুল ইসলাম আশফাক, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি আলমগীর হোসাইন তালুকদার, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাও. নাজমুল ইসলাম, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেস ক্লাবের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আল আমিন, জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন, সদস্য সচিব মো. ফয়সাল প্রিন্স, প্রমুখসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক ও আলেম সমাজের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। সভা সঞ্চালনা করেন ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. এরশাদ মিয়া।
