পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুরের বিপিনপুর-নিজামপুর সড়ক সংস্কারকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সংস্কারের পর হস্তান্তরের আগেই সড়কে ফাটল দেখা দিয়েছে। উঠে গেছে কার্পেটিং। কোথাও কোথাও মাটির সঙ্গে মিশে গেছে পাথর ও বিটুমিনের স্তর।
সরকারি বরাদ্দে ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকায় সড়কটি সংস্কারকাজ করা হয়েছে। অনিয়মের এমন চিত্র উঠে আসায় পরিদর্শন করে ফের সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সড়কটি পরিদর্শন করে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সংস্কারকাজের এক মাস পার হতেই রাস্তার এই অবস্থা। মহিপুর ইউনিয়নের বিপিনপুর নিজামপুরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া সড়কটি, পাশের তালতলীর সঙ্গে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম। তবে সাড়ে তিন কিলোমিটারের এ সড়কে এখন মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার মতো হালকা যানবাহন চললেও, দেবে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটি সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি অনিয়মের বিষয়ে কথা বললে, মামলা-হামলার ভয় দেখিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখানে মনগড়া কাজ করে গেছে। স্থানীয়রা যখন বাধা দিয়েছেন, তখন তারা বলেছে– ‘বেশি কথা বললে চাঁদাবাজি মামলা দেব। ২ লাখ টাকা অফিসারদের দিলে আর কোনো সমস্যা নাই। এভাবেই কাজ করে যাব।’
কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার এক মাস পর সব জায়গা থেকে বিটুমিন উঠতে শুরু করেছে। ফের সড়ক সংস্কার করা হোক, নাহলে তাদের দুর্ভোগের শেষ থাকবে না, বলছেন কলাপাড়ার নিজামপুর এলাকার বাসিন্দারা।
সাব-ঠিকাদারের গাফিলতিতে এ অবস্থা হয়েছে স্বীকার করে, ফের সংস্কার করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শহিদুল এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী জানান, এখনও এলজিইডিকে কাজটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। তবে সাব-ঠিকাদারের গাফিলতি এবং বৃষ্টিতে কয়েকটি স্থানে নষ্ট হয়েছে। জায়গাগুলো ফের সংস্কার করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে সাব-ঠিকাদার মো. আল-আমিনকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এদিকে, বৃষ্টির কারণে রাস্তার অবস্থা এমন হয়েছে জানিয়ে, ফের সংস্কার করে না দিলে কাজের বিল পরিশোধ করা হবেনা বলে আশ্বস্ত করেছে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। পরিদর্শন শেষে কার্পেটিং উঠা ও ভেঙে যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে, ফের সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
মহিপুর সাগর সিনেমা হল থেকে নিজামপুর পর্যন্ত এ সড়কটি সংস্কারে খরচ হয়েছে ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।