ব্যাপক অনিয়মের কারণে এস আলম গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শরিয়াহভিত্তিক ছয় ব্যাংকের ঋণ বিতরণ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ছয় ব্যাংকে এস আলম গ্রুপ ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ আছে ৯৫ হাজার কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর বেশিরভাগই নেওয়া হয়েছে ব্যাংকিং নিয়ম উপেক্ষা করে।
আওয়ামী লীগের সাবেক রাজনীতিবিদ আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর আত্মীয় মোহাম্মদ সাইফুল আলম ওরফে এস আলম ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন এস আলম গ্রুপ।
চট্টগ্রামে ইসলামী ব্যাংকের চাক্তাই শাখায় অ্যাকাউন্ট খোলার এক মাসের মধ্যে, কোন যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঢেউটিন বিক্রির প্রতিষ্ঠান মুরাদ এন্টারপ্রাইজকে ৮৯০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। যেটি এস আলম গ্রুপের একটি ছায়া কোম্পানি। এর এক বছর পর দেওয়া হয় আরও ১১০ কোটি টাকা।
এস আলম গ্রুপ এবং এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো ২০১৭ সাল থেকে, গত জুনের মধ্যে ছয়টি ব্যাংক থেকে মোট ৯৫ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। যার ৭৯ শতাংশই এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন ইসলামী ব্যাংক থেকে। এই ঋণের পরিমাণ ব্যাংকিংখাতের মোট বকেয়া ঋণের পাঁচ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব ঋণের বেশিরভাগই ব্যাংকিং নিয়ম উপেক্ষা করে নেওয়া হয়েছে। কারণ ইসলামী ব্যাংকসহ অন্য ৫টি ব্যাংকেই বড় পদে আছেন এস আলমের বড় ছেলে আহসানুল আলমসহ পরিবারের সদস্যরা।
এস আলম গ্রুপকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকও নিয়ম মানেনি। এ ব্যাংক থেকে ১৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে গ্রুপটি। যার মধ্যে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে এস আলমের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এস আলমের সহযোগী কোম্পানিগুলোর ঋণ যোগ করলে, স্যোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক থেকে নেওয়া মোট ঋণের পরিমাণ আরও বেশি হবে।