
বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চল পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা থেকে অবশেষে সেনাবাহিনী সরিয়ে নিতে শুরু করেছে চীন ও ভারত।
সোমবার ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি উত্তেজনা কমাতে ‘বাফার জোন’ তৈরির উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় সামরিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, উত্তেজনা কমাতে সেনা সরিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ স্থায়ী কোনো সমাধান দেয় কি-না তা জানতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, ‘বাফার জোন’ তৈরির উদ্দেশ্যে গালওয়ানের বিতর্কিত এলাকা থেকে অস্থায়ী স্থাপনাগুলোও সরিয়ে নিতে শুরু করেছে চীনা সেনারা। গত শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হঠাৎ লাদাখ সফরের তিন দিন পর ওই অঞ্চল থেকে দুই দেশেরই সেনা সরে যাওয়ার খবর এলো।
শুধু গালওয়ান নয়, বিতর্কিত গোগরা এবং হট স্প্রিং এলাকাতেও চীন ও ভারত সেনা সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে পূর্ব লাদাখের প্যাংগং লেকের উত্তরের ফিঙ্গার অঞ্চলের পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি।
ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, গালওয়ানে প্রায় এক-দু’কিলোমিটার পিছিয়ে গিয়েছে চীনের সেনারা। তবে গালওয়ান নদীর তীরে চীনা সেনাদের সাজোয়া গাড়ি দেখা গেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। গালওয়ান উপত্যকায় মোতায়েন ভারতীয় সেনাবাহিনীও আগের অবস্থান থেকে পিছু হটেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত ১৫ জুন ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে গালওয়ানের যে স্থানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিল সেখান থেকে চীনা সেনাদের সরে যেতে দেখা গেছে। তাবু ও অন্যান্য অস্থায়ী স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছে তারা। তবে এই প্রক্রিয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো চীনা সামরিক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমের সামনে কোনো মন্তব্য করেননি।
সোমবার সেনা সরানোর প্রক্রিয়ার বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ানকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি জানান, দুই দেশই সীমান্তে স্থিতিশীল অবস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। দুই দেশের ঐকমত্যে পৌঁছানো বিষয়গুলো ভারত ঠিকমতো পালন করবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন লিজিয়ান।
গত ১৫ জুন গালওয়ানে চীন ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে ২০ ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়। চীনা সেনাবাহিনীতেও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে ভারত দাবি করলেও বেইজিং সরকারিভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এরপরই দুই দেশের সেনারা কয়েক দফা বৈঠকে বসেন। গত বুধবার সীমান্ত উত্তেজনা নিরসনে ভারত ও চীনের সেনবাহিনীর লেফটেন্যান্ট-জেনারেল পর্যায়ের কর্মকর্তারা তৃতীয় দফার বৈঠকে বসেছিলেন। ১২ ঘণ্টা ধরে তারা আলোচনা করেছিলেন। সেই বৈঠকের ফলশ্রুতিতেই দুই দেশ সেনা সরিয়ে নিচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলো।
ফই/সাহু/ফই
