
কয়েকদিন আগেও পৃথিবীর আলো দেখেছেন দুচোখ দিয়ে। দেখেছেন প্রিয়জন, স্বজনকে। কিন্তু সেই চোখ দিয়ে আর কখনই পৃথিবীর আলো কিংবা প্রিয়জনকে দেখতে পারবেন না বাগেরহাটের তরুণ সাইফুল ইসলাম। মধ্যযুগীয় হামলায় চিরতরে হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি। বর্বর এ হামলার ঘটনায় মামলা না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
মা অঝোরে কেঁদেই চলেছেন। আর সন্তান অনিশ্চিত এক জীবন নিয়ে নির্বাক শুয়ে।
জমি-জমা নিয়ে বিরোধ, পারিবারিক কলহ আর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হামলায় চোখের আলো নিভে গেছে বাগেরহাটের সাইফুল ইসলামের। রাতের আঁধারে বন্ধুর মাধ্যমে ডেকে নিয়ে হাত-পা ভেঙেই ক্ষান্ত হয়নি দুর্বৃত্তরা। ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে খুচিয়ে নষ্ট করে দিয়েছে তার দুটি চোখ।
হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করা সাইফুলের জানান, একই বংশের মামুন মোল্লার সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। এরই জেরে, ২২ জানুয়ারি রাতে তার বন্ধুর মাধ্যমে সু কৌশলে তাকে তুলে নিয়ে যায় মামুনের লোকজন। চালানো হয় নির্মম নির্যাতন।
নির্যাতনের শিকার সাইফুল আরও বলেন, তারা আমাকে ডেকে নিয়ে হাত পা ভেঙ্গে দেয়। দড়ি দিয়ে বেধে নৃংশসভাবে ছুরি দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে নষ্ট করে দেয় চোখ দুটি। সবই তো হারালাম, এ ঘটনার বিচার চাই।
সাইফুলের পাশে স্বজদের আহাজারি, ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতালের পরিবেশ। তারা জানিয়েছেন, নির্যাতনের পর গুরুতর আহত সাইফুলকে ফসলের মাঠে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।
সাইফুলের মা ও ভাই এমন বিবৎসতা দেখিনি কখনও। আর কখনই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে না সে, এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি। উল্টো আমাদের হয়রানি করছে।
আহত সাইফুলকে উদ্ধার করে শরণখোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বুধবার রাতে তাকে ভর্তি করা হয় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে।
জক/ফই/
