
পৈশাচিক নারকীয়তার অন্ধকারে ঢাকা সেই রাত। পরিবারসহ নৃশংস বর্বরতার শিকার হন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের মানচিত্রে রাজনীতির স্রোত বয়ে চলতে শুরু করে, উল্টো পথে। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর, সাড়ে সাত কোটি প্রাণের মোহনা, আগস্টের অন্ধকার এই রাতে হয়ে উঠে রক্তগঙ্গা, ঘাতকের গর্জনে। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে যা সবচেয়ে কলঙ্কিত দিন।
অন্য সাধারণ দিনের মতোই ১৪ আগস্ট রাতে কনিষ্ঠ পুত্র রাসেলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ঘুমিয়েছিলেন। ঘুমিয়ে জেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল ও তার স্ত্রী সুলতানা কামাল। শেখ জামাল ও রোজী জামাল এবং বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ নাসের। ঘুমে আচ্ছন্ন ৫৬ হাজার বর্গমাইল। কেবল, ঘুম ছিলো না চক্রান্তকারীদের চোখে।
ভোর রাতে ট্যাংকের বহর নিয়ে শুরু আক্রমণ। প্রথম বাধায় লুটিয়ে পড়েন ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজন। গুলির শব্দে বেরিয়ে আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দোতলায় সিঁড়ির গোড়াতেই, স্বাধীনতার স্থপতিকে সামনে পেয়ে যায় ঘাতকের দল।
গর্জে ওঠে বঙ্গবন্ধুর সিংহ হৃদয়, ‘তোরা কি চাস?’ উত্তর এলো বুলেটের ঝাঝরা কণ্ঠে। এরপর রচিত হয় নারকীয়তার এক বীভৎস অধ্যায়। একে একে বঙ্গবন্ধু, সহধর্মীনী শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন ছেলে, দুই পুত্রবধূ ও ছোট ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও তার পরিবার। বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্তা স্ত্রী আরজু মণিসহ ১৮ জনকে হত্যা করে ক্ষান্ত হয় খুনিরা।
তবু ধূলিসাৎ হয়নি সব। রয়ে গেছে ষোল কোটি প্রাণে এক আদর্শের বীজ। যে আদর্শ, গড়ে তুলছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ।
