
ফুটপাতে হকার বসা নিয়ে নারায়ণগঞ্জে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ও আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম শামীম ওসমানের সমর্থকদের সংঘর্ষে নগরীর চাষাঢ়া এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ১৬ জানুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার এই সংঘর্ষে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ‘হকারমুক্ত ফুটপাত চাই’ স্লোগান দিয়ে লোকজন নিয়ে চাষাঢ়ার দিকে হেঁটে আসছিলেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। এ সময় স্থানীয় সায়েম প্লাজা থেকে আইভীর লোকজনের ওপর বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পিস্তল উঁচিয়ে ফাঁকা গুলিও ছোড়া হয়। এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে সড়কে পড়ে যান সেলিনা হায়াৎ আইভী। তার পায়ে ইটের আঘাত লাগে। সেখান থেকে তিনি সায়েম প্লাজার পাশে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, সাংসদ শামীম ওসমানের নির্দেশে এ হামলা চালানো হয়েছে।
প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আইভী বলেন, ‘আমি মৃত্যুকে ভয় করি না। আমি শান্তিপূর্ণভাবে হেঁটে আসছিলাম। চাষাঢ়ার রাইফেলস ক্লাবে বসে শামীম ওসমান আমার ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশ পেয়ে তাঁর লোকজন ইটপাটকেল ছোড়ে। এটা নিরস্ত্র লোকের ওপর সশস্ত্র হামলা। এ হামলায় সাংবাদিকসহ ১০ জন আহত হয়েছেন।’
আইভী সমর্থকরা দাবি করেন, তাদের লক্ষ করে গুলিও ছুড়েছে শামীম সমর্থকরা। গুলিবর্ষণকারী হিসেবে নিয়াজুল ইসলাম নামে একজনের নামও বলেন তারা।
ঘটনাস্থল চাষাঢ়ায় পুলিশ থাকলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। মেয়র আইভী অবিলম্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
তবে বিকেল পাঁচটার দিকে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। সাড়ে পাঁচটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আসে।
আইভীর অভিযোগের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি সেখানে প্রথমে ছিলামই না। আমার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব আমাকে বিকেলে ফোন করে বলেন সেখানে যা হচ্ছে তা বন্ধ করতে। পরে আমি সেখানে যাই এবং উত্তেজিত লোকজনকে সরিয়ে আনতে সক্ষম হই। আইভী কারও সঙ্গে কোনো কথা না বলে রাস্তায় নামলেন। তাঁর সঙ্গে ছিল যুবদলের খুনের আসামিরা। পরে তারা হকারদের মারধর করেছে। পরে হকাররা উত্তেজিত হলে সংঘর্ষ হয়। আইভীর লোকজনও গুলি চালিয়েছে। ককটেল ফাটিয়েছে। ১০ জন হকার আহত হয়েছেন।’
শাফে/শুকি//
