
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলা নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ করায়, নাগরিক টেলিভিশনকে লিগ্যাল নোটিস পাঠানো হয়েছে।
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ক্ষমা না চাইলে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়ার পাশাপাশি ফৌজদারি মামলা করার হুমকি দেয়া হয়েছে। তবে নাগরিক টেলিভিশন মনে করে, যথাযথ তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বিভিন্ন সময়ে এসব অনিয়মের খবর উঠে আসে গণমাধ্যমে।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর শিল্পকলা একাডেমিতে নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রচার হয়। তাতে উঠে আসে লিখিত পরীক্ষায় পাস না করেই চাকরি করে চলেছেন ৪৬ জন। ওই সংবাদ প্রচারের পর তদন্ত কমিটি গঠন করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এখনও সেই তদন্ত চলছে। শিল্পকলা একাডেমির লিগ্যাল নোটিসে বলা হয়েছে, ওই নিয়োগ পরীক্ষায় কোন অনিয়ম হয়নি।
এ বিষয়ে নাগরিক টেলিভিশনের বক্তব্য হচ্ছে, লিখিত পরীক্ষায় পাস না করেও যারা চাকরি করছেন, তাদের নম্বরপত্র আছে নাগরিক টেলিভিশনের হাতে। আছে পরীক্ষার ফলাফলের কপিও। যারা পরীক্ষা নিয়েছেন তারা এ নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল টাঙ্গাইল জেলার কালচারাল অফিসার খন্দকার রেদওয়ানা ইসলাম খুনের ঘটনা নিয়ে আরেকটি সংবাদ প্রকাশ করে নাগরিক টেলিভিশন। প্রতিবেদনে বলা হয়, জীবন নিয়ে শঙ্কা থাকায় বদলির আবেদন করেছিলেন রেদওয়ানা। তার পরিবারের দাবি, বদলি করা হলে হয়তো তাকে জীবন দিতে হতো না।
লিগ্যাল নোটসে বলা হয়েছে, ওই প্রতিবেদনে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে যা জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। তবে নাগরিক টেলিভিশনের বক্তব্য হচ্ছে, বদলির আবেদনের পর শিল্পকলা একাডেমির সচিব, ঢাকায় না হলেও মুন্সিগঞ্জে তাকে বদলির সুপারিশ করে নোট দেন।
তবে তা আমলে নেননি ডিজি। সেই চিঠিও আছে নাগরিক টেলিভিশনের হাতে। এছাড়া, ওই প্রতিবেদনে স্বজনহারা পরিবারটির বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছিল।
তৃতীয়ত, মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যেখানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান এবং রাষ্ট্রপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন, সেখানে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রবেশ করেছিলেন।
সেই খবর গত ২৬ মে প্রচার করে নাগরিক টেলিভিশন। লিগ্যাল নোটিসে বলা হয়েছে, সেখানকার কঠোর নিরাপত্তা ভেদ করে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওই অনুষ্ঠানে প্রবেশ করার সুযোগ নেই। শিল্পকলা একাডেমি মনে করে, তাদের হেয় করতেই ওই রিপোর্ট করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নাগরিকের বক্তব্য হচ্ছে, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরা কিভাবে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রবেশ করল, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় শিল্পকলার ডিজির কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছে।
সেই চিঠি ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এরসাথে প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রবেশ করা অন্তত এক ডজন আর্টিস্টের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট নাগরিক টেলিভিশনের কাছে আছে।
নাগরিক টেলিভিশন কোন তথ্য প্রমাণ ছাড়া সংবাদ প্রচার করে না। তাই লিগ্যাল নোটিসের তুলে অভিযোগের বিষয়ে নাগরিক টেলিভিশন একমত নয়।
আহা/ফই
