
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের মার্কিন ডলারের বাজারে কিছুদিন ধরেই বিরাজ করছে অস্থিরতা। দাম বাড়ছে হু হু করে। এরই ধারাবাহিকতায় খোলা বাজারে ডলারের দাম একশ টাকা ছাড়িয়েছে। এ নিয়ে আমদানিকারকদের পাশাপাশি দুশ্চিন্তা বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মনেও। প্রশ্ন হচ্ছে, ডলারের দাম বাড়া কি আসলেই উদ্বেগের, নাকি এর ইতিবাচক দিকও আছে?
কোনো মুদ্রার বিনিয়ম হার কমালে তাকে অবমূল্যায়ন বলা হয়। আর বিনিময় হার বাড়লে বলা হয় পুনর্মূল্যায়ন। বিশ্বে এখন ভাসমান বিনিময় হার নীতি মানা হয়। ফলে বাজারে চাহিদা ও জোগানের ওপর মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারিত হয়।

তথ্য উপাত্ত বলছে, মুদ্রা বিনিময় পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে চায় না অনেক দেশ। কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখে অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশও এই দলে পড়ে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এখন মধ্যবর্তী মুদ্রা হচ্ছে ডলার। ফলে এখন ডলারের মুদ্রার বিপরীতেই অবমূল্যায়ন হচ্ছে।
অবমূল্যায়ন পছন্দ করেন মূলত রপ্তানিকারকেরা। প্রবাস থেকে যারা অর্থ পাঠান, তাঁরাও এ থেকে লাভবান হন। যেমন এক ডলারের বিপরীতে টাকার দর ৮৫ থেকে ৮৭ টাকা করার অর্থ হচ্ছে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে দুই টাকা। এতে রপ্তানিকারকেরা প্রতি ডলার আয় থেকে বাড়তি দুই টাকা বেশি হাতে পাচ্ছেন। এতে রপ্তানিতে উৎসাহিত হন তারা। তাই অনেক অর্থনীতিবিদই ডলারের দাম বাড়ানোর পরামর্শ দেন।

অন্যদিকে আমদানি করতে হয় ডলার কিনে। ফলে আগের চেয়ে দুই টাকা বেশি দিয়ে আমদানিকারকদের ডলার কিনতে হচ্ছে। এতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এটি যেমন স্বস্তি দিতে পারে অর্থনীতিকে, আবার ডলারের দাম বাড়লে প্রবাসীরাও বেশি অর্থ দেশে পাঠান।
বাংলাদেশের অর্থনীতি বুনিয়াদ শক্ত, দাবি করা হচ্ছে। তাই বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকট সামলে নেবে দেশ এমনটি প্রত্যাশা। আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ যে বৈশ্বিক চাপ তৈরি করেছে অর্থনীতিতে তা সামলাতে একগুচ্ছ উদ্যোগ হাতে নেয়া হয়েছে। ডলারের খরচ কমাতে অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিলাস পণ্যের আমদানিতেও লাগাম টানা হয়েছে।
সাইদ আরমান
