
চলচ্চিত্র পরিচালক শফিকুর রহমান মারা গেছেন। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি ঢাকার ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।

মরহুমের বড় ভাই রয়টার্সের চিত্রগ্রাহক রফিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) বাদ জোহর বিএফডিসিতে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বাদ আসর ফকিরাপুল জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে মরহুমকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।

করোনা শুরুর পর থেকে শফিকুর রহমান বাসায়ই থাকতেন। বই পড়ে, পরিবারকে সময় দিয়ে ও নাতির সঙ্গে সময় কাটাতেন। গত ১৫ আগস্ট তাঁর স্ট্রোক হয়। সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার একটি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দুই দিন পর তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
১৯৭৩ সালে চলচ্চিত্রনির্মাতা ফিরোজ আল মামুনের সহকারী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন শফিকুর রহমান। সিনেমাটির নাম ছিল ‘আলোর পথে’। পরে তিনি আজহারুল ইসলাম খান, সৈয়দ মোহাম্মদ আওয়াল, আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে সহকারী পরিচালক ও কিছু নির্মাতার সিনেমায় সহযোগী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ সিনেমার সহযোগী চিত্রনাট্যকার ছিলেন তিনি।

‘অভিযান’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সময় চিত্রনায়ক রাজ্জাকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে রাজ্জাকের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন তিনি রাজ্জাকের প্রযোজনা সংস্থা রাজলক্ষ্মী প্রডাকশনের হয়ে কাজ করেছেন। রাজলক্ষ্মীর ব্যানারে তাঁর প্রথম পরিচালিত ছবি ‘ঢাকা ৮৬’। পরে একে একে নির্মাণ করেন ‘রাজামিস্ত্রী’, ‘মালামতি’, ‘জ্বীনের বাদশা’। আবারও সিনেমা নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চলচ্চিত্র অঙ্গনের বর্তমান অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি। সিনেমা নিয়ে অনেক সময় হতাশা প্রকাশ করতেন। তিনি চাইতেন দেশের সিনেমা দিন দিন এগিয়ে যাক। নিয়মিত এফডিসি ও চলচ্চিত্রের খোঁজ–খবর রাখতেন শফিকুর রহমান।
শফিকুর রহমান স্ত্রী সারা রহমান, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অনেক গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর ছেলে আশিকুর রহমান রয়টার্সের বাংলাদেশ প্রতিনিধি। মেয়ে সুমাইয়া রহমান চাকরি করেন।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি।